বাগেরহাটের মোল্লারহাটে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উদয়পুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এসময় বসতবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
মোল্লারহাট থানার ওসি আ স ম খায়রুল আনাম জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উদয়পুর গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য প্রার্থী কামরুজ্জামান মোল্লা এবং আস্তাইল গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য প্রার্থী আজিজুর রহমান মকুর মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এদিকে, কামরুজ্জামান মোল্লার চাচাতো ভাই রইস মোল্লা এক মেয়ে বন্ধুকে নিয়ে গ্রামে এলে মকুর লোকজন মেয়েটিকে পুলিশে দিতে উদ্যত হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ ১০ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া মোল্লারহাট স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে বাকিদের চিকিৎসা চলছে। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুল আলম ছানা উপস্থিত হয়ে দুই গ্রুপকে নিবৃত্ত করতে ব্যর্থ হন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ প্রায় ৪০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ রবিউল, শওকত শরিফ, মনির সরদার, লিয়াকত আলী ও জামাল শরিফসহ ১৩ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা ও গোপালগঞ্জের হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আহতদের মোল্লারহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার সময় কামরুজ্জামানের লোকেরা দুলাল গাজী, আবুল কালাম গাজী, আবুল কাশেম , মকু মেম্বার, বাবুল শরিফ, নান্নু শরিফ ও আশ্বাব গাজীর বসতবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করেছে মকু মেম্বার গ্রুপের লোকজন। সরেজমিন উদয়পুর গিয়ে দেখা যায়, ৬-৭টি বসতঘরের বাসনপত্রসহ অন্যান্য জিনিস তছনছ করা হয়েছে। ঘরের টিনের বেড়া দায়ের কোপে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মোল্লারহাট উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর আলম ছানা জানান, আমি নিজেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে উভয় গ্রুপকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। উভয় গ্রুপের মেম্বার প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় লোক বলে তিনি দাবি করেন। উদয়পুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এস কে হায়দার মামুন জানান, একটি নারীঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে কামরুজ্জামানের গ্রুপ ও মকু গ্রুপের মধ্যে বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আর যে নারীকে নিয়ে এই সংঘর্ষ, আমি নিজে সে নারীকে উদ্ধার করে থানায় সোপর্দ করেছি । ওসি আ স ম খায়রুল আনাম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ফের সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। খুলনা থেকে আসা মেয়েটিকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।