খুলনায় গেল বছরের তুলনায় কৃষি শ্রমিক ও বীজের মূল্য বাড়ায় এ বছর বোরোর উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হবে বলে আশাবাদী কৃষি কর্মকর্তারা। ফেব্রুয়ারির বৃষ্টি বোরো ক্ষেতে ইউরিয়ার চাহিদা মিটিয়েছে। এরপরও ন্যায্যমূল্য পাবেন কিনা তা নিয়ে আশঙ্কায় আছেন কৃষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জেলায় একজন কৃষি শ্রমিকের মজুরি ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। গেল মৌসুমের তুলনায় এবার উচ্চফলনশীল জাতের বীজের মূল্য কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খুলনার উপপরিচালক মোঃ আবদুল লতিফ জানান, মাঠে বোরো আবাদের বয়স দেড় মাস হলেও পোকা আক্রমণ করেনি। জেলার ১৭৫ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে পোকা দমনে আলোর ফাঁদ সরবরাহ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে, তাই বাম্পার উৎপাদন হবে বলে তিনি আশাবাদী।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, কৃষক ভূ-উপরস্থ পানি ব্যবহার করছেন। মার্চের প্রথম থেকে শীত পড়ায় পোকার আক্রমণ দেখা দেয়নি। এছাড়া পোকা দমনে ক্ষেতে পার্সিন পদ্ধতি (গাছের ডাল) ব্যবহার করা হয়েছে। উপজেলায় সারের ঘাটতি নেই। ২৪ ফেব্রুয়ারি ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি বোরো ক্ষেতের জন্য আশীর্বাদ বয়ে এনেছে। পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম জানান, এবার হরিঢালী ও কপিলমুনি ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এখানে পোকার আক্রমণ দেখা যায়নি। এ উপজেলায় বোরোর বাম্পার উৎপাদন হবে বলে তিনি আশাবাদী। দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরীফ মোঃ ঈসমাইল জানান, বিএডিসি চাহিদার তুলনায় ২২ শতাংশ বীজ সরবরাহ করতে সক্ষম হয়। কৃষক খোলাবাজার থেকে বীজ সংগ্রহ করে আবাদ করেন। এতে তাদের একটু খরচ বেশি পড়েছে। গেল মৌসুমের তুলনায় এবার কৃষি শ্রমিকের মজুরিও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি জানান।
পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের মালত গ্রামের কৃষক মোঃ মোশাররফ হোসাইন জানান, বৃষ্টির কারণে এবার সেচ কম লাগবে। পাশাপাশি পোকা দমনে কৃষি বিভাগ আলোর ফাঁদ সরবরাহ করেছে। কৃষি শ্রমিক ও বীজের মূল্য বাড়ায় এবার উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তাই বোরোর ন্যায্যমূল্য পাবেন কিনা তা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।