আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১২-০৩-২০১৬ তারিখে পত্রিকা

রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া জমিদারবাড়ি

রিয়াজ হোসেন, রূপগঞ্জ
| দেশ

রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া জমিদারবাড়ি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আওতায় থাকা একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। অথচ সংস্কারের নামে অদক্ষ হাতে মুছে ফেলা হচ্ছে প্রত্নতাত্ত্বিক নকশা। প্রায় ১২৫ বছর এ প্রাসাদ নির্মিত হয়। শাহাজাদপুরের জমিদার রাম রতন ব্যানার্জি মুড়াপাড়া জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা এবং জমিদারদের ঊর্ধ্বতন ষষ্ঠ পুরুষ। তিনিই মুড়াপাড়া জমিদারবাড়ির গোড়াপত্তন করেন। রাম রতন ব্যানার্জির ছেলে পিতাম্বর ব্যানার্জি এবং তার ছেলে প্রতাপ চন্দ্র ব্যানার্জি জমিদারি কিনে ১৮৮৯ সালে এ প্রাসাদের পেছনের অংশ নির্মাণ করেন। প্রতাপ চন্দ্র ব্যানার্জির ছেলে বিজয় চন্দ্র ব্যানার্জি ১৮৯৯ সালে প্রাসাদের সামনে একতলা ভবন নির্মাণ ও সেখানে দুইটি পুকুর খনন করেন। তার দুই ছেলে জগদীশ চন্দ্র ব্যানার্জি ও আশুতোষ চন্দ্র ব্যানার্জি ১৯০৯ সালে প্রাসাদটির দোতলা সম্পন্ন করেন। ১৯৪৭ সালে জগদীশ চন্দ্র ব্যানার্জি সপরিবারে ভারত চলে গেলে বাড়িটি সরকারের দখলে আসে। ১৯৪৮ সালে সরকার এখানে একটি হাসপাতাল স্থাপন করে। কিছুকাল এটি কিশোর সংশোধনী কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। ১৯৬৬ সালে এখানে হাইস্কুল ও কলেজ স্থাপিত হয়। ১৯৮৬ সালে বাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধীনে যায়। এটি বর্তমানে মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশাল এ জমিদারবাড়িতে নাচঘর, আস্তাবল, উপাসনালয়, ভান্ডার, কাচারিসহ রয়েছে ৯৫টি কক্ষ। সব কামরা ভেতরে-বাইরে নকশাখচিত। মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কর্তৃপক্ষ ৬ মাস ধরে বাড়ির পেছনের কিছু অংশের মূল ডিজাইন পরিবর্তন করে সেখানে নতুন ক্লাসরুম নির্মাণ করছেন। এছাড়া বিভিন্ন কক্ষের ভেতর-বাইরের আদিরূপের নকশাসহ দেয়ালের বিভিন্ন অংশে নতুন করে প্লাস্টার ও রঙ করে তারা প্রত্নতাত্ত্বিক সৌন্দর্য পুরোপুরি নষ্ট করে ফেলেছেন। কয়েক বছর আগে অনুমোদনবিহীন রঙ করে পুরো বাড়ির সৌন্দর্যহানি করেছেন তারা। কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা বলেন, শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এটা করা হচ্ছে। তাছাড়া আমি নিশ্চিত নই যে, বাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধীনে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লোকমান হোসেন বলেন, বাড়িটি যে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধীনে সেটা আমার জানা ছিলনা। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক পরিচালক রাখি রায় বলেন, অবশ্যই মুড়াপাড়া প্রাসাদ প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আওতায়। প্রাসাদে নতুন কাজ করার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কেউ প্রাসাদটির ক্ষতি করে থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।