আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

মেঘনা পাড়ের জেলেরা ইলিশ আহরণে নামবে আজ

চাঁদপুর প্রতিনিধি
| শেষ পাতা

আজ বুধবার (১ এপ্রিল) রাত ১২টার পর থেকে ইলিশসহ সব মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। জেলেরা নামবে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করতে। তাই এখন থেকেই জেলার নিবন্ধিত ৫১ হাজার ১৯০ জেলে পরিবারে চলছে মাছ আহরণের প্রস্তুতি। নৌকা ও জাল মেরামত এবং নতুন করে জাল তৈরি করতে মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। সদর উপজেলার জেলেপাড়াগুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৯০ কিলোমিটার এলাকায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময় মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মওজুদ ও সরবরাহ আইনত দ-নীয়। এ কারণে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নে দুই মাস পদ্মা-মেঘনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করছেন জেলা টাস্কফোর্স। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু অসাধু জেলে ইলিশের পোনা জাটকা নিধনযজ্ঞে মেতে ওঠেন। জনবল সংকট হওয়ায় জাটকা রক্ষা কর্মসূচি শতভাগ সফল করা সম্ভব হয় না প্রশাসনের।

দুপুরে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের সাখুয়া গ্রামের নদী পাড় জেলে পাড়াগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, জেলেদের জাল ও নৌকা  মেরামত করার কাজে ব্যস্ততা। রামদাসদী গ্রামের জেলে হাসান বেপারী জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময় তারা নদীতে মাছ আহরণ করেন না। সরকার যেটুকু সহযোগিতা করেন, তা দিয়ে তাদের সংসার চলে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে মাছ আহরণে নামবেন তারা। সেজন্য জাল ও নৌকা প্রস্তুত করছেন। আনোয়ার হোসেন রাঢ়ী জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা তারা মানলেও একশ্রেণির জেলে তা না মেনে জাটকা নিধন করেন। আর এ কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে নৌ-পুলিশ। এ ধরনের অভিযান কিংবা জাটকা রক্ষা কর্মসূচি দিয়ে কী লাভ হবে এমন মন্তব্য করেন তিনি। শাহজাহান গাজী জানান, দুই মাস তারা মাছ আহরণ করেন না। সরকার এ সময়ের জন্য ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে খাদ্যসহায়তা হিসেবে যে চাল দেন, সেটা তারা পেয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের পেশা জেলে হওয়ার কারণে এ সময়ে অন্য কোনো কাজে যোগ দেন না। ১ এপ্রিল থেকে মাছ আহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যদি আল্লাহর ইচ্ছা থাকে তাহলে ইলিশ পাবেন এমন আশা তাদের। তবে জাটকা নিধনের কারণে ইলিশ উৎপাদন কমে যায় এমন ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি জানান, চাঁদপুরে জাটকা রক্ষা কর্মসূচিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শতভাগ চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিছুসংখ্যক জেলে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই নদীতে মাছ আহরণ করেছে। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত জেলে ছাড়াও সব জেলে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে।