বিশাল পায়ের ছাপ। হিমালয়ের অতিমানব যেন। বড়সড় গরিলার মতো দেখতে। বরফের দেশে হঠাৎই হাজির হয় এরা। ইয়েতি নিয়ে রয়েছে এমনই কিছু মিথ। হিমালয়, সাইবেরিয়া, মধ্য ও পূর্ব এশিয়ায় এই ইয়েতিদের দেখা যায়, জনশ্রুতি বলছে এমনটাই। তবে উনিশ শতকে ইয়েতিকে নিয়ে পশ্চিমা সংস্কৃতিতেই প্রথম নানা জনশ্রুতি তৈরি হয়। যারা ‘তিব্বতে টিনটিন’ বা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক’ পড়েছেন, তাদের কাছে এই ইয়েতি নামটা বেশ পরিচিত?
ইয়েতি যদিও একটি তিব্বতি শব্দ। কেউ কেউ প্রাণীটিকে মিশে বা ‘মানব ভল্লুক’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন। কেউ বলেন কাং আদমি। কেউ ইয়েতিকে বলেন মিগোই বা মিগো অর্থাৎ বনমানুষ। আবার নেপালি শব্দ বান মানচিও নাকি ইয়েতিকেই বোঝায়, পাহাড়ি মানুষদের কাছে এটা বেশ পরিচিত শব্দ। নেপাল বা তিব্বতের জনশ্রুতি বলছে, ইয়েতি ওরফে ‘মিরকাকে’ যে দেখবে তার মৃত্যু হবে, বা তাকে নাকি ইয়েতি মেরেই ফেলবে। ইয়েতির সঙ্গে অস্ত্র হিসেবে থাকে একটা বিশাল পাথর এবং পাহাড়ে শিস দিয়ে ঘুরে বেড়ায় সে। যদিও বিজ্ঞানীরা এই মিথ একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন।
সাধারণত পায়ের ছাপের যে ছবি মিলেছে হিমালয়ে নানা সময়ে, তা দেখে অনুমান করা হয়েছেÑ ইয়েতি সাদা রোমযুক্ত বিশাল প্রাণী, যার পেশিবহুল চেহারা। ইয়েতির উচ্চতা নাকি ৬ থেকে ১০ ফুট। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় হিমালয়ের পার্বত্য এলাকার স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, পায়ের ছাপকে ইয়েতির বলে দাবি অনুযায়ী উল্লেখ করা হয়েছে এমনটাই উচ্চতার কথা। পায়ের যেসব ছাপকে নানা সময়ে ইয়েতির পায়ের ছাপ হিসেবে দাবি করা হয়েছে, সে অনুযায়ী বিচার করলে ইয়েতির ওজন ৯০ থেকে ২০০ কিলোগ্রামের কাছাকাছি। গায়ে অসংখ্য রোম থাকার জন্য ওজন বেশি বলে মনে হয়, এমনটা পর্বতারোহীদের থেকে অভিজ্ঞতা শুনে লিখেছেন কেউ কেউ। ২০১০ সালে একদল শিকারী রোমবিহীন চারপেয়ে একটি প্রাণী দেখতে পেয়েছিল, তাদের দাবি সেটিই নাকি ছিল ইয়েতি। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, বড়সড় বিড়াল জাতীয় কোনো লোমশ প্রাণী সেটি। এই বিশালাকার প্রাণীর উপস্থিতি, অস্তিত্ব সম্পর্কে সন্দেহ রয়েই যায়। আনন্দবাজার