আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

একনেকে ৭ প্রকল্প অনুমোদন

কেরানীগঞ্জ নয়, কেমিক্যাল পল্লি হচ্ছে সিরাজদিখানে

নিজস্ব প্রতিবেদক
| শেষ পাতা

পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল দ্রব্যের ব্যবসা সরিয়ে নিতে কেরানীগঞ্জে বিসিক কেমিক্যাল পল্লীর কথা থাকলেও তা মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, জনবহুল এবং অপেক্ষাকৃত কম জায়গা হওয়ায় কেরানীগঞ্জের পরিবর্তে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে এ পল্লী স্থাপন করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ‘বিসিক কেমিক্যাল পল্লী’ প্রকল্পের সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। একনেকের মঙ্গলবারের সভায় স্থায়ী কেমিক্যাল পল্লী ও অস্থায়ী ভিত্তিতে ৫৪টি কেমিক্যাল গুদাম স্থাপনসহ মোট সাতটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা প্রকল্পগুলো অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

একনেক বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সবগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ পড়বে ১০ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। সরকারি তহবিল থেকে চার হাজার ৪০৬ কোটি টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে পাঁচ হাজার ২২০ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৪৯০ কোটি টাকা খরচ করা হবে।

অনুমোদন পাওয়া ‘বিসিক কেমিক্যাল পল্লী’ প্রকল্পের বিষয়ে তিনি বলেন, জনবহুল এবং অপেক্ষাকৃত কম জায়গা হওয়ায় কেরানীগঞ্জে হচ্ছে না বিসিক কেমিক্যাল পল্লী। এর পরিবর্তে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে এ পল্লী স্থাপন করা হচ্ছে। সম্প্রতি পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ের পর এ সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর আগে ৫০ একর জমিতে এটি গড়ে তোলার কথা থাকলেও এখন জমির পরিমাণ বাড়িয়ে ৩১০ একর করা হয়েছে। এ জন্য এক হাজার ৬১৬ কোটি টাকা খরচে সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে ‘বিসিক কেমিক্যাল পল্লী’ প্রকল্পটি। চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। যত দিন এ কেমিক্যাল পল্লী স্থাপন না হচ্ছে ততদিন পুরান ঢাকাকে নিরাপদ করতে অস্থায়ী ভিত্তিতে স্থাপন করা হচ্ছে ৫৪টি কেমিক্যাল গোডাউন। ঢাকার কদমতলীর শ্যামপুরে এসব গুদাম নির্মাণের লক্ষ্যে ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৭৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বিসিআইসি।
এম এ মান্নান জানান, গত ২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা এলাকায় কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের জন্য আবাসিক এলাকার সব ধরনের রাসায়নিক কারখানা গোডাউন স্থানান্তরে স্থাপনাধীন বিসিক কেমিক্যাল  পল্লীটি আরও বড় পরিসরে এবং তুলনামূলক কম জনবহুল এলাকায় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। সেজন্য অনুমোদিত বিসিক কেমিক্যাল পল্লীটি ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় ৫০ একর জমিতে স্থাপনের পরিবর্তে ঢাকা-দোহার সড়ক বরাবর মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার তুলশিখালী ব্রিজ সংলগ্ন গোয়ালিয়া, চিত্রকোট ও কামারকান্দা নামক তিনটি মৌজায় মোট ৩১০ একর জমিতে স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে তিন হাজার ৯৭১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে দুই হাজার ৪৭৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ৭৪৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সমাজকল্যাণ ভবন নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। নীলফামারী জেলার চাড়ালকাটা নদী সোজাকরণ এবং তিস্তা নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৪৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।