আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

বালিয়াকান্দিতে গম সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত

মাস পার হলেও কৃষকের নামের তালিকা চূড়ান্ত হয়নি

সোহেল মিয়া, বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী)
| দেশ

সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি গম সংগ্রহ কার্যক্রমের এক মাস পার হয়ে গেলেও কৃষকদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করা যায়নি। ফলে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে গম ক্রয় শুরু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। যথাসময় গম ক্রয় শুরু করতে না পারার কারণে গম সংগ্রহ অভিযান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। সেই সঙ্গে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কিনা সেটিও ভাবার বিষয়। আর সময়মতো গম বিক্রয় করতে না পারায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ উপজেলার কৃষকরা। এদিকে জেলায় কতজন কৃষক গম আবাদ করেছে তারও কোনো সুনির্দিষ্ট তালিকা নেই সংশ্লিষ্টদের দপ্তরে। তবে কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার জানান, আমার ধারণা রাজবাড়ী জেলায় সরাসরি গম আবাদ করছে ৫০ থেকে ৫২ হাজার কৃষক। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনানুযায়ী সারা দেশে একযোগে ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত গম সংগ্রহ অভিযান চলার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলাসহ জেলার পাঁচটি উপজেলার একটিতেও আনুষ্ঠানিকভাবে এ অভিযান শুরু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। সরকার ঘোষিত নির্দিষ্ট সময় গম সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে না পারার বিষয়টি স্বীকার করে রাজবাড়ীর ভারপ্রাপ্ত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুনশী মুজিবর রহমান জানান, উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের একটি নামের তালিকা তৈরি করে সেটি উপজেলা খাদ্য শস্য কমিটির কাছে দাখিল করার কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত জেলার পাঁচটি উপজেলার একটিতেও কৃষকের নামের তালিকা চূড়ান্ত করতে পারেনি। ফলে আমরা এখনও গম সংরক্ষণ কার্যক্রম শুরু করতে পারিনি। তবে আশা করছি চলতি সপ্তাহের মধ্যেই কার্যক্রম শুরু করতে পারব। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজবাড়ীর উপপরিচালক ফজলুর রহমান জানান, গম সংগ্রহ কার্যক্রমের জন্য কৃষকের যে নামের তালিকা তৈরি করা হয় সেটি আমার দপ্তরে আসে না। নামের তালিকাটি স্ব-স্ব উপজেলা খাদ্য শস্য কমিটির কাছে প্রেরণ করতে হয়। তাই এ বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে কেন এখনও কৃষকের নামের তালিকা চূড়ান্ত হয়নি সে বিষয়টি আমি খোঁজ নিচ্ছি। রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলী জানান, বালিয়াকান্দি উপজেলাসহ সব উপজেলায়ই খুব দ্রুত জরুরি ভিত্তিতে গম সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করার জন্য এরই মধ্যে আমি জেলা খাদ্য শস্য কমিটির সভায় সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দিয়েছি। আশা করছি তারা দ্রুতই কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। উল্লেখ্য, চলতি বছরে রাজবাড়ীতে ১৫ হাজার ১৭১ হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। বিভিন্ন কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১২ হাজার ৪২৫ হেক্টর। আবাদ কমে যাওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ হাজার ৫৪৬ মেট্রিক টন থেকে কমে পূরণ হয়েছে ৩৯ হাজার ৩৪২ মেট্রিক টন। আর জেলার পাঁচটি উপজেলায় সরকারি গম সংগ্রহ কার্যক্রমের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৬১২ টন। এর মধ্যে বালিয়াকান্দিতে ৩৭০, পাংশায় ৪২৪, কালুখালী ২৩৪, গোয়ালন্দে ১৭০ ও সদর উপজেলায় ৪১৪ মেট্রিক টন গম ক্রয় করবে সরকার।