আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৩-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

সীমান্তের নাফ নদ অরক্ষিত

উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প ইয়াবার টার্নিং পয়েন্ট

মোসলেহ উদ্দিন, উখিয়া
| শেষ পাতা

মিয়ানমারের রাখাইনের ঢেকিবনিয়া, নাগপুরা, গদুরা ও বলি বাজারের চারটি শীর্ষ ইয়াবা পাচারকারী গ্রুপের সংঘবদ্ধ একটি দল বালুখালী ক্যাম্পে অবস্থান নিয়ে ইয়াবার লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। যে কারণে উখিয়া সীমান্তের বালুখালীসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে রীতিমতো ইয়াবার চালান আসছে। ঘটছে গুলিবর্ষণের মতো ঘটনাও। তবে বিজিবি কর্মকর্তারা বলছেন, তারা সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি রাখছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বালুখালীর একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি জানান, কাদিরাঘাট ঢেকিবনিয়া রহমতের বিল সাইক্লোন সেল্টার, চাকমা কাটা, বালুখালী পূর্বপাড়া কাটা পাহাড় (চন্দ্রপাড়া), বেতবুনিয়া গোলপাতা বাগানের পয়েন্টসহ চারটি পয়েন্ট এখন ইয়াবা কারবারীদের নিরাপদ রুট। ওই জনপ্রতিনিধি জানান, বালুখালী কাটা পাহাড় চন্দ্রপাড়া চিংড়ি ঘের দিয়ে ১৭ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে বড় ধরনের একটি ইয়াবার চালান পাচারকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ ছিদ্দিকের ছেলে নাজমুল (২২) গুলিবিদ্ধ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উখিয়া থানা পুলিশ পরদিন দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করেছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছে।

বালুখালীর নুরুল আবছার মেম্বার জানান, বালুখালী ক্যাম্পে ইয়াবার লেনদেন এবং খোলা বাজারে বিক্রিসহ পতিতাবৃত্তি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই এলাকার একজন সচেতন লোক জানান, এসবের সঙ্গে বর্তমান ও সাবেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সম্পৃক্ত থাকায় এ ইয়াবার ব্যবহার বেড়েছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই বালুখালীর পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। অপরাধ জগতের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়।
ভয়ানক এ অনৈতিক পরিবেশ এখন শক্ত হাতে দমন করা না হলে পরবর্তী সময়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকেই সামাল দিতে বেগ পেতে হবে। উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ান উখিয়া সীমান্ত দিয়ে ইয়াবার চালান পাচার হয়ে আসার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সোর্স সংবাদের ভিত্তিতে ২৭ এপ্রিল শনিবার রাতে বালুখালী ক্যাম্পের দক্ষিণ পশ্চিম চিংড়ি ঘেরে ব্রিজের উপর দিয়ে চার থেকে পাঁচজন ইয়াবা কারবারি ক্যাম্পে ঢোকার চেষ্টা করছিল। এ সময় পুলিশ ধাওয়া করলে ইয়াবার বস্তা ফেলে পাচারকারিরা পালিয়ে গেলেও একজন পাচারকারিকে চিহ্নিত করা গেছে বলে তিনি জানান।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের জানান, এ ঘটনায় উখিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রুজু করে সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমদ বলেন, সীমান্তের নাফ নদ পার হয়ে চিংড়ি ঘের এলাকা দিয়ে ইয়াবার চালান আসছে। তিনি বলেন, নাফ নদ ও চিংড়ি ঘেরে মাছ ধরে জীবন ধারণের সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলোর কথা চিন্তা করে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। তথাপিও বিজিবি কঠোর অবস্থান রয়েছে।