ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ কেটে যাওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দরে বেড়েছে কর্মচাঞ্চল্য। দীর্ঘ হচ্ছে জাহাজের সারি। সেই সঙ্গে বাড়ছে কনটেইনার সংখ্যা। ফণীর কারণে টানা প্রায় ৩ দিন বন্ধ ছিল চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম। রমজানের ভোগ্যপণ্য নিয়ে আসা বেশ কয়েকটি জাহাজও নোঙর করে আছে বন্দর বহির্নোঙরে। তবে বন্দর কর্মকর্তারা বলেন, দ্রুত চলছে পণ্য খালাস। কোনো ধরনের জটের শঙ্কা নেই।
চট্টগ্রাম বন্দরে রোববার জাহাজ ছিল ৮৮টি। আর কনটেইনার আছে প্রায় ৪০ হাজার (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে)। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বেশ কিছু জাহাজ ভেড়ানো হয় বন্দর জেটিতে। আরও বহু জাহাজ আছে বহির্নোঙরে।
শনিবার বিকাল থেকে বন্দর জেটিতে শুরু হয় জাহাজ চলাচল। বন্দর বহির্নোঙরেও বড় জাহাজ থেকে শুরু হয়েছে পণ্য খালাস। এসব পণ্য নিয়ে লাইটার জাহাজগুলো জেটিতে ভিড়তে দেরি হতে পারে। এদিকে জট নিরসনে আমদানি পণ্যভর্তি সব কনটেইনার অফ ডকে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি
শিল্পপতি আলহাজ খলিলুর রহমান।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, দুর্যোগ কেটে যাওয়ায় জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। ১৭৫ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ জাহাজগুলো শনিবার সন্ধ্যায় জোয়ারের সময় জেটিতে আসা শুরু হয়। জেটিতে ভেড়ার পরপরই কন্টেইনার খালাস শুরু হয়েছে। কোনো ধরনের জটের শঙ্কা নেই।
বন্দর সূত্র জানায়, ১৭৫ মিটারের অধিক দীর্ঘ জাহাজগুলো রোববার দিনের প্রথম জোয়ারের সময় জেটিতে ভেড়ানো হয়। বহির্নোঙরেও নোঙর করে থাকা জাহাজ থেকে শুরু হয়েছে পণ্য খালাস। এসব পণ্য নিয়ে বাংলাবাজারসহ ১৬ ঘাটে ভিড়বে জাহাজ। সেখান থেকে চাক্তাই খাতুনগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে শুরু হবে পণ্য সরবরাহ। প্রায় ৩৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর জেটি থেকে পণ্য ডেলিভারি শনিবার আবারও চালু হয়। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালের জোয়ারের সময় জেটি থেকে সব জাহাজ বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে মাল ডেলিভারি বন্ধ হয় বৃহস্পতিবার রাতে। ফণীর প্রভাব কেটে যাওয়ায় শনিবার দুপুরে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব সতর্কতা সংকেত এলার্ট-থ্রি প্রত্যাহার করে। এরপর পর্যায়ক্রমে বন্দরের যাবতীয় অপারেশনাল কর্মকা- শুরু হয়।
বন্দরের পরিবহন বিভাগ সূত্র জানায়, আমদানি পণ্যবোঝাই ৮৮টি জাহাজ রয়েছে বহির্নোঙরে। এগুলোর মধ্যে ২২টি কনটেইনার জাহাজ। এসব জাহাজ সহসা ভিড়বে জেটিতে। বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিওএ) চেয়ারম্যান এ কে এম শামসুজ্জামান (রাসেল) জানান, সমুদ্র উত্তাল থাকায় বহির্নোঙরে কোনো লাইটার জাহাজ যায়নি। রোববার সকাল থেকে বড় আকারের লাইটার জাহাজ গেছে। এগুলো লাইটারিং করবে মাদার ভেসেলের পণ্য।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমদানিকারকের সঙ্গে ভাড়া চুক্তি অনুসরণ করে পণ্যভর্তি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠায় মালিকরা। চুক্তিতে আছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য খালাস বিঘিœত হলে ডেমারেজ (ক্ষতিপূরণ) গুনতে হবে মালিককে।