জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেছেন, নদীর উন্নয়ন ছাড়া সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন সম্ভব নয়। এসডিজি অর্জন করতে হলে নদীর উন্নয়ন করতেই হবে। এজন্য নদী রক্ষা কমিশন কাজ শুরু করেছে। রোববার রাজশাহী জেলা নদী রক্ষা কমিটির সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়। ড. মুজিবুর রহমান বলেন, এসডিজির কথা বলতে গেলে আগে নদীর কথা বলতে হবে। কারণ, নদীর ওপরেই সভ্যতার বিকাশ নির্ভরশীল। নদীতে পানি না থাকলে, জীববৈচিত্র্য না থাকলে উন্নয়ন ‘টেকসই’ হবে না। তিনি বলেন, আমরা উন্নয়ন করব। কিন্তু নদীকে হত্যা করে নয়। যদি উন্নয়নের কথা বলে নদীকে হত্যা করি তাহলে সেটা হবে মূর্খতা। নতুন নতুন শিল্প-কারখানা হবে। উন্নয়ন হবে। কিন্তু আমার কারখানার বর্জ্য আমি নদীতে ফেলতে পারি না। বর্জ্য কোথায় যাবে তা না জানলে আমি ‘গ্রেট স্টুপিড’।
নদী রক্ষায় কমিশন কাজ শুরু করেছে উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা আইন হয় ২০১৩ সালে। পরের বছর থেকে নদী রক্ষা কমিশনের যাত্রা শুরু। এখন কমিশনের শৈশব চলছে। তারপরও এরই মধ্যে আমরা দেশের সব নদ-নদী পরিদর্শন করেছি। সেগুলোর কী সমস্যা, কীভাবে সমাধান হবে সেসব নিয়ে আমরা ৬০০ পৃষ্ঠার একটা প্রতিবেদন প্রস্তুত করছি। সেটা প্রিন্টিং পর্যায়ে আছে। ড. মুজিবুর রহমান বলেন, দেশের নদীগুলোর বর্তমান অবস্থার প্রতিবেদনটি প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হবে। সেটি সংসদে যাবে। অনলাইনে থাকবে। যে কোনো মানুষ দেশের নদ-নদীর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবে। আর পরিদর্শনকালে যেসব সমস্যা ধরা পড়েছে সেগুলো সমাধানের জন্য সরকার কাজ শুরু করবে। কারণ, সরকার উন্নয়ন চায়। আর উন্নয়ন করতে হলে নদীকে বাঁচাতেই হবে।
নদী দখল ও দূষণমুক্ত রোধে জেলা প্রশাসন এ সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদের। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, নদী কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. আলাউদ্দিন, জেলার পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সায়েদুল আলম, গবেষক ড. তসিকুল ইসলাম রাজা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক, রাজশাহী সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী প্রমুখ।