বরিশালে চাহিদার তুলনায় ডিলার কম থাকায় দীর্ঘ লাইন
রমজান উপলক্ষে বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) ন্যায্য মূল্যে পাঁচটি পণ্য বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। পণ্য কেনার জন্য ভোক্তাদের নগরীর টিসিবি নির্ধারিত ডিলারদের ট্রাকের সামনে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হয়। প্রতিদিন বেলা ২টার মধ্যে পণ্য বিক্রি শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে অনেক ভোক্তা দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও পণ্য ক্রয় সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চাহিদার তুলনায় নির্ধারিত ডিলার কম থাকায় বেশিরভাগ ভোক্তা টিসিবি ন্যায্য মূল্যের পাঁচটি পণ্য ক্রয় সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে ভোক্তাদের অভিযোগ। একই অভিযোগ ডিলারদেরও। তারা বলেন, ভোক্তার তুলনায় ডিলার কম থাকায় ডিলারের ট্রাকের সামনে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। ফলে তাদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
রমজানে ন্যায্য মূল্যে ক্রয় সুবিধা দিতে পাঁচটি পণ্য যথাক্রমে সয়াবিন, ছোলা, খেজুর, চিনি ও মশুর ডাল ডিলারদের মাধ্যমে বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে টিসিবি। সয়াবিনের লিটার ৮৫ টাকা এবং প্রতি কেজি ছোলা ৬০ টাকা, মশুর ডাল ৪৪ টাকা, চিনি ৪৭ টাকা ও খেজুর ১৩৫ টাকায় ডিলারদের কাছ থেকে কিনতে পারছেন ভোক্তারা। এসব পণ্যের দাম বাজারের চেয়ে টিসিবি পণ্যের দিকে ঝুঁকছেন ক্রেতারা।
টিসিবি বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মহানগরীতে তাদের নির্ধারিত ডিলার আছেন ২৫ জন। রোটেশন প্রথায় প্রতিদিন পাঁচজন করে ডিলারকে পণ্য দেওয়া হচ্ছে। ফলে একজন ডিলার পাঁচদিন পর পর টিসিবি থেকে পণ্য পাচ্ছেন। নগরীর রানা এন্টারপ্রাইজের স্বাত্বাধিকারী শেখ মাসুদ রানা বলেন, প্রত্যেক পাঁচ দিন পর পর ৪০০ লিটার সয়াবিন, ৪০০ কেজি করে চিনি ও ছোলা এবং ১০০ কেজি খেজুর বরাদ্দ পাচ্ছেন। ক্রেতা চাহিদা বেশি হওয়ায় একদিনেই সব পণ্য বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
গতকাল রোববার দুপুরে নগরীর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে সড়কের পাশে ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন ডিলার আনোয়ার হোসেন। পণ্য কেনার জন্য ট্রাকের পেছনের অংশে ক্রেতারা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। অদূরে নগর ভবন ও আদালত ভবনের সামনের সড়কে টিসিবি ডিলারের সামনেও একই অবস্থা। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে পণ্য ক্রয়ের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন স্কুল শিক্ষিকা সাদিয়া আফরিন। তিনি বলেন, প্রখর রোদের মধ্যে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও বিক্রেতার কাছ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে একপর্যায়ে তিনি লাইন ছেড়ে চলে আসেন। বেলা ২টায় নগর ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায় ডিলারের সঙ্গে ক্রেতাদের বাতবিতা-া চলছে। পণ্য শেষ হয়ে গেছে জানানো হলেও ক্রেতারা তা মানছেন না। তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে এক পর্যায়ে ডিলারদের ট্রাক ওই এলাকা ত্যাগ করে।
এ ব্যাপারে টিসিবির বরিশাল অফিস প্রধান আনিচুর রহমান বলেন, তিনি নিজেও গতকাল রোববার মনিটরিং করেছেন। সাধারণ মানুষের চাহিদা রয়েছে বেশ। কিন্তু ট্রাকে করে বিক্রির স্পট আর বৃদ্ধির সুযোগ নেই। তিনি বলেন, পণ্য থাকলে অবশ্যই দিতে হবে। না দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার কার্যালয়ের আওতায় ৪০ জন ডিলার পণ্য তুলেছে। বরিশাল অফিসের আওতায় ৬৭টি ট্রাকে সেল চলছে। এর মধ্যে নগরীতে তিনটি বলে জানান টিসিবি প্রধান আনিচুর।