আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৬-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

জাপা চলবে এরশাদের নির্দেশেই

বললেন জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
| প্রথম পাতা

দলের সবাইকে সঙ্গে নিয়েই জাতীয় পার্টিকে এগিয়ে নিতে চান জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেছেন, এরশাদ আমাদের নেতা। তিনি যতদিন বেঁচে আছেন, তার নির্দেশনায় পার্টি চলবে। নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর রোববার বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় পার্টির কাজকর্ম করতে পারছেন না, এতে স্বাভাবিক গতিতে স্থবিরতা এসেছে। এ কারণে তাকে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং এরশাদের অবর্তমানে পূর্ণ চেয়ারম্যান করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, এরশাদের অবর্তমানে দলের মধ্যে কোনো বিভ্রান্তি এড়াতেই এটি করা হয়েছে। এতে নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়েই কাজ করতে চাই। পার্টিকে 

আরও শক্তিশালী করতে চাই। জিএম কাদের বলেন, কাউন্সিল আয়োজন করাটাই এখন পার্টির মূল কাজ। এ কারণে সামনে অনেক কাজ রয়েছে। তিনি বলেন, দলকে আরও শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। জাপার মহাসচিব পদে পরিবর্তন আসছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এসব নিউজ একেবারেই ভিত্তিহীন, ফরমায়েশি। বিভ্রান্তি ছড়াতে এসব করানো হয়েছে।
এ সময় জিএম কাদের বলেন, জাপার নতুন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদ বিষয়ে দলের নেতাদের ওপর চেয়ারম্যানের কোনো আস্থাহীনতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, এটা চেয়ারম্যান সাহেব ভালো বলতে পারবেন। তার মনের ভেতর থাকা বিষয় তো বলতে পারব না। তবে তিনি এখন যেটা করেছেন সেটা একেবারে ফুলপ্রুভ, মানে উনি নিজে দায়িত্বপত্রে স্বাক্ষর করেছেন এবং সেটা গণমাধ্যমের সামনে অনানুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন। কোনোরকম দ্বিধাদ্বন্দ্ব যেন না থাকে তার জন্য যতটুকু করা সম্ভব, সেভাবেই তিনি করার চেষ্টা করেছেন। কাজেই ওই বিষয়ে আর কোনোরকম প্রশ্ন তোলার সুযোগ  নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান তার ক্ষমতা বলে পার্টি পরিচালনায় নির্দেশনা দেন। এটা বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যারা সমালোচনা করেন, তারা সমালোচনার জন্যই নানা কথা বলতে পারেন। সিনিয়র নেতারা ফোন করে অনেকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে ইচ্ছুক।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থেকে পরবর্তী সময় পূর্ণ চেয়ারম্যান হিসেবে দলের কেউ যদি মেনে না নেয়, তাহলে কি করবেনÑ এমন পশ্নে জিএম কাদের বলেন, পার্টির নিয়মনীতি অনুযায়ী যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পার্টির শৃংখলা রক্ষায় যা প্রয়োজন হবে, তা-ই করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে পার্টির শীর্ষ নেতারা নেই কেন, জানতে চাইলে জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এখানে অফিসটা তোমরা যদি দেখ তাহলে বুঝবে, কয়টা চেম্বার আছে। কয়জন লোক এখানে আসার কথা। তারাই আসেন। চেয়ারম্যান সাহেবের একটা চেম্বার আছে। তার আসার কথা। এখানে তো প্রেসিডিয়াম সদস্যদের প্রতিদিন আসার কথা নয়। যদি তাদের ডাকা হয় তাহলে মিটিংয়ে আসার কথা। আর অন্যরা প্রয়োজন হলেই আসবেন। এটা পার্টি অফিস নয় যে, রেগুলোর সব নেতাকর্মী হাজির হবেন। এখানে যে কয়েকজনের চেম্বার আছে, সে কয়েকটিতে যাদের আসার দরকার, তারা আসেন। আর যখন কোনো প্রোগ্রাম বা কর্মসূচি দেওয়া হয়, বিশেষ করে যদি কোনো সভার আহ্বান করা হয় তখন যাদের ডাকা হয় তারা আসেন। এটাই নিয়ম। 
জাতীয় পার্টিতে কোনো অস্থিরতা আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, অস্থিরতা যারা বললেন- আমি একেবারে নাকচ করে দিব না। তবে অস্থিরতা একটা জীবিত মানুষের স্বাভাবিক হ্যাভিট বা অভ্যাসের অংশ। অস্থিরতা সবার থাকে এবং সব সময় থাকে, সব দলেরই থাকে। এটাকে অস্বাভাবিক ব্যাপার বলে মনে করি না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পার্টির যুগ্ম মহাসচিব শফিকুল ইসলাম শফিক, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মিলন, শফিউল্লাহ শফি, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক কর্নেল সাব্বির আহমেদ, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান, কেন্দ্রীয় নেতা এনাম জয়নাল আবেদিন, অ্যাডভোকেট আবু  তৈয়ব, মো. জাকির হোসেন মৃধা ও আনোয়ার হোসেন তোতা প্রমুখ। 
এর আগে শনিবার রাতে ছোট ভাই জিএম কাদেরকে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। শনিবার রাত ১১টায় বারিধারায় নিজ বাসভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে ওই ঘোষণা দেন তিনি।