অতি বৃষ্টি আর প্রতিবেশী দেশের পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের হালির হাওর ও শনির হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। ছবিটি রোববার তোলা- আলোকিত বাংলাদেশ
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে অতি বৃষ্টি আর ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের কারণে সুনামগঞ্জের হালির হাওর ও শনির হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে বৌলাই নদী দিয়ে পানি ডুকছে। শনিবার রাতে জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ও রহমতপুর এলাকা দিয়ে শনির হাওরে এবং বদরপুর এলাকা দিয়ে হালির হাওরে পানি প্রবেশ করেছে। হাওরে পানি ঢুকলেও তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানা গেছে। কারণ পানি ধীরে ধীরে হাওরে প্রবেশ করছে। এদিকে অতিরিক্ত কাজের লোক লাগিয়ে ধান কাটার জন্য সহায়তা করছে উপজেলা প্রশাসন। হাওরের যে দিকে পানি প্রবেশ করছে, সেদিকগুলোয় পানি আটকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষক ও প্রশাসনের লোকজন। আশা করা যাচ্ছে, দুই দিন রোদ থাকলে হাওরের সব ধান কাটা সম্ভব হবে। এদিকে শনির হাওরের যে ৭ হেক্টর জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত আছে রোদ থাকলে পানি কমে গেলে ওই জমির ধানও কাটতে পারবেন কৃষক। স্থানীয়রা জানান, মেঘালয় পাহাড় থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে এসে বৌলাই নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় এবং উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবল বেগে ধাবিত হতে থাকে। এতেই হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের ডিজাইন লেভেল অতিক্রম করে পানি প্রবেশ করে। বাঁধের ওপর বালুর বস্তা ও বাঁশ দিয়ে পানি ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কৃষক জানান, ক্ষতি কিছুটা হয়েছে তবে রোদ থাকলে তারা দ্রুত ধান কেটে ফেলতে পারবেন।
কৃষক আবদুল করিম বলেন, এখনও উঁচু এলাকায় কিছু জমির ধান কাটা হয়নি। হাওরের নিচু জমির ধান কাটা হয়েছে। খলায় এখনও অনেক ধান ও খড় রয়েছে। পানি আসার কারণে সেগুলো ক্ষতির মুখে পড়বে । কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, হাওরের প্রায় সব জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। তাহিরপুর, ধর্মপাশা, শাল্লা, দিরাই, জগন্নাথপুর, জামাগলঞ্জ এসব এলাকার হাওরের শতভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। এখন শুধু মাড়াই প্রক্রিয়া করছেন কৃষক। লাইমলা লাগানোই (দেরিতে লাগানোয়) সদর দোয়রাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর এলাকায় কিছু ধান কাটা বাকি রয়েছে। এখন পর্যন্ত হাওর এলাকায় মোট ১ লাখ ৭২ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ১ লাখ ৬১ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে বলে দাবি করছে কৃষি বিভাগ। জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, শনির হাওরে শুধু ৭ হেক্টর ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া হালির হাওরের বাঁধ ভাঙেনি সুøইসগেট দিয়ে পানি ঢুকেছে। বাঁশ ও বস্তা দিয়ে মেরামতের চেষ্টা চলছে।