আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৯-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

ববি শিক্ষার্থীদের বৈঠক

নতুন ভিসির কাছে একগুচ্ছ দাবি

বরিশাল ব্যুরো
| শেষ পাতা

বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে আসা ছাত্রছাত্রীরা একদিকে যেমন সেশনজটে ভুগছেন, তেমনি নানা খাতে বাড়তি অর্থ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অথচ অনেক চাহিদাও পূরণ হচ্ছে না তাদের। এ পরিস্থিতিতে বৈষম্য দূরীকরণে সম্প্রতি আন্দোলন করে ভিসিকে পূর্ণমেয়াদে ছুটিতে যেতে বাধ্য করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু তাদের সব দাবি এখনও রয়ে গেছে অপূর্ণ। এসব দাবি পূরণ কবে হবে, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। এগুলো বাস্তবায়নে বুধবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বদানকারীরা এক বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রায় ৩৫টি দাবি চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী রবি কিংবা সোমবার এসব দাবি বিশ^বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসির কাছে তুলে ধরবেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

দুপুর ১২টায় বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ বৈঠক করেন। বৈঠকের নেতৃত্বেদানকারী সমাজবিজ্ঞান শেষ বর্ষের ছাত্র আলিম সালেহি বলেন, ববি ভিসি পূর্ণমেয়াদে ছুটিতে যাওয়ার পর ৩০ এপ্রিল তারা বিজয় মিছিল করেন। ওইদিন এক সাক্ষাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি তাদের সব দাবি পূরণের আশ^াস দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা বৈঠক করে প্রায় ৩৫টি দাবি চিহ্নিত করেছেন। এগুলো আগামী রবি অথবা সোমবার বিশ^বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসির কাছে লিখিত আকারে তুলে ধরবেন। তিনি বলেন, তাদের প্রতিটি দাবি ন্যায্য। দ্রুত বাস্তবায়ন হোকÑ এমনটাই কামনা করেন তারা।

শিক্ষার্থীদের বৈঠক সূত্র জানা গেছে, বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের দীর্ঘদিনের দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেÑ ইমপ্রুভমেন্ট ফি ১ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ২০০ টাকা করা; কেননা অন্যসব বিশ^বিদ্যালয়ে এ ফি অনেক কম। সেমিস্টার ফি পূর্বে ৩ হাজার ৫০০ টাকা ছিল, এখন ৪ হাজার টাকা; এ খাতে ফি কমানোর দাবি। ভর্তি ফি ২০১৪-১৫ সেশনে ১৩ হাজার টাকা ছিল। এখন তা বর্ধিত করে ১৫ হাজার টাকা থেকে ১৭ হাজার টাকা হয়েছে, যা কমানো জরুরি। ফিটনেসবিহীন বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে নতুন গাড়ির ব্যবস্থা করা। অনার্স শেষ হওয়ার পরপরই ফলাফলের জন্য অপেক্ষা না করে মাস্টার্স কোর্স শুরু করা। মাস্টার্সে ভর্তি ফি ১৫ হাজার টাকা, যা কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করা। অনার্স উত্তীর্ণদের মাস্টার্সে ভর্তি হতে হলে ন্যূনতম ৩ পয়েন্ট পেতে হবে, এমন বিধান বাতিল করা। সুপেয় খাবার পানির ব্যবস্থা করা। আবাসন ফি কমানো। লাইব্রেরির রিডিং রুম বৃদ্ধি করা। ক্যাম্পাসকে ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসা। কম্পিউটার ল্যাবের সুবিধা নিশ্চিত করা। সেশনজট কাটিয়ে ওঠা, ৩ বছর ধরে পরিচয়পত্র প্রদান বন্ধ, এর নিশ্চিতকরণ। 
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ববি শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম, মো. মিজান, মিলান, তনুশ্রী, সফিকুল ইসলাম, আল আমিন প্রমুখ। ববি ছাত্র আল আমিন বলেন, শিক্ষার্থীদের যেসব সমস্যা বিদ্যমান সেগুলো লিখিত আকারে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসিকে আগামী সপ্তাহে দেওয়া হবে। তারা আন্দোলন করেছেন এসব দাবি পূরণের কারণেই। এগুলো যাতে অনতিবিলম্বে পূরণ হয় এজন্য বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করবেন তারা। বৈঠকে উপস্থিত ববি ছাত্র সফিকুল ইসলাম বলেন, তারা তাদের নানা বৈষম্যগুলো চিহ্নিত করেছেন। দ্রুত তা বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অচিরেই উপস্থাপন করা হবে। বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের এসব দাবি যৌক্তিক। দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসির কাছে শিক্ষার্থীরা এসব দাবি লিখিত আকারে দেবে বলে শুনেছেন। দাবিগুলো উত্থাপন হলে এগুলো আদায়ে শিক্ষকরাও ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকবেন।