ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো কলম্বিয়া সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র দুইটির মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বাড়তে পারে। বুধবার কলম্বিয়া তাদের ভূখ-ে ভেনেজুয়েলার একটি সেনাদল প্রবেশের অভিযোগ তোলার পর এ হুঁশিয়ারি দেন মাদুরো। এদিকে মাদুরোর হুঁশিয়ারি বার্তার তীব্র সমালোচনা করেছে কলম্বিয়া। এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলার ৩০ সেনাসদস্য তাদের ভূখ-ে ঢুকে পড়ে। সেনাদলটি কলম্বিয়ার ভূখ-ে প্রায় ২০ মিনিট অবস্থান করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ডাকে কলম্বিয়ার সেনাদের হেলিকপ্টারযোগে সেখানে পাঠানো হলে ভেনেজুয়েলার সেনাদলটি চলে যায়। দীর্ঘদিন ধরেই ল্যাটিন আমেরিকার দেশ দুইটির মধ্যে সম্পর্কে উত্তেজনা চলছে। দুই দেশই বিগত বছরগুলোয় পাল্টাপাল্টি রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করেছে। কলম্বিয়া সরকার জানায়, তাদের সামরিক বাহিনী তাদের দেশের ভূখ-গত অখ-তা রক্ষায় প্রস্তুত আছে। উল্লেখ্য, ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার মধ্যে লাগোয়া সীমান্ত প্রায় ২ হাজার ২০০ কিলোমিটার। ভেনেজুয়েলার স্বঘোষিত অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা জুয়ান গুইদোকে কলম্বিয়া স্বীকৃতি দেওয়ার পর গেল ফেব্রুয়ারিতে বোগোটার সঙ্গে কারাকাসের কূটনৈতিক সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে। এদিকে গুইদোকে সমর্থনকারী ল্যাটিন আমেরিকার আরেক দেশ ব্রাজিল জানিয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণভাবে মাদুরো সরকারের পতন চায়। ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্নেস্টো আরাওজো দেশটিতে সামরিক হস্তুক্ষেপের বিষয়টিও নাকচ করে দিয়েছেন। বুধবার আরাওজো বলেন, ভেনেজুয়েলার সামরিক ইউনিটকে গুইদোর পক্ষে আনার প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হবে বলে তিনি আশা করেন। এদিকে ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা গুইদোর কংগ্রেসনাল ডেপুটিকে আটক করেছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা। বুধবার বিরোধী দল নিয়ন্ত্রিত জাতীয় পরিষদের সহ-সভাপতি এদগার জামব্রানোকে তার নিজ গাড়ির ভেতরে বসা অবস্থায় গাড়িসহ একটি টো ট্রাক দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে গুইদোর ডেপুটিতে আটকের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জামব্রানোকে আশু মুক্তি দেওয়া না হলে এর ‘পরিণতি ভোগ করতে হবে’ বলে সতর্ক করেছে মার্কিন সরকার। উল্লেখ্য, মাদুরোবিরোধী আন্দোলনে গুইদোকে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে অনেকগুলো নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে।
গেল সপ্তাহে দেশটির জাতীয় পরিষদের সভাপতি গুইদো মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে হটাতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করার পর এ প্রথম কোনো আইনপ্রণেতাকে আটক করল ভেনেজুয়েলার গোয়েন্দা সংস্থা। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গুইদো বলেন, আমরা ভেনিজুয়েলার জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানাচ্ছি যে, সরকার জাতীয় পরিষদের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্টকে অপহরণ করেছে। গুইদো হচ্ছেন জাতীয় পরিষদের প্রধান এবং গেল জানুয়ারিতে দেশের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের নাম ঘোষণার পর থেকে তিনি মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরাতে লড়াই করে যাচ্ছেন। বিবিসি, ডেইলি মেইল, স্পুটুনিক নিউজ