আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১০-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

পোচেত্তিনোর আনন্দাশ্রু

স্পোর্টস ডেস্ক
| খেলা

দুই দলই অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে উঠেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। লিভারপুলের বিপক্ষে শিরোপা জয়ের লড়াইটা তাই উপভোগ্য হবেÑ প্রত্যাশা করছেন টটেনহ্যাম হটস্পার কোচ মাওরিসিও পোচেত্তিনো। বুধবার রাতে শেষ চারের ফিরতি পর্বে আয়াক্সের মাঠে ২ গোল হজমের পরও ৩-২ গোলে জিতে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠে স্পার্সরা। গত সপ্তাহে টটেনহ্যামের মাঠে প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতেছিল আয়াক্স। আর প্রথম সেমিফাইনালে বার্সেলোনার মাঠে প্রথম লেগে ৩-০ গোলে হারের পর ঘরের মাঠে ৪-০ গোলের জয়ে ফাইনালে পা রাখে লিভারপুল। ১ জুন মাদ্রিদের ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোয় ফাইনালে মুখোমুখি হবে দুই ব্রিটিশ ক্লাব। 
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো হতে যাওয়া ‘অল ইংলিশ’ ফাইনালের অপেক্ষায় আছেন পোচেত্তিনো, ‘ইয়ুর্গেন ক্লপ ও লিভারপুলের সব খেলোয়াড়কে অভিনন্দন জানাই, কারণ তারা দুর্দান্ত ছিল। বার্সার বিপক্ষে তাদের সেমিফাইনালের লড়াই খুব উপভোগ করলাম। তারাও সবাই নায়ক, অবশ্যই দুই ইংলিশ দলের মধ্যে দারুণ একটা ফাইনাল হবে, যা আমরা নিশ্চিত করেই উপভোগ করব।’
তবে একটা সময় মনে হচ্ছিল ১৯৯৬ সালের পর আবার ফাইনালে পাচ্ছে আয়াক্সই। শুরুতে দুর্দান্ত ফুটবল খেলে দলটি ২ গোলে এগিয়েও যায়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে বিপদ ডেকে আনে তারা। যোগ করা সময় শেষ হওয়ার দশ সেকেন্ড বাকি থাকতে নাটকীয় গোলে দলের ফাইনাল নিশ্চিত করেন লুকাস, তার শট জালে জড়ালে নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলেন না পোচেত্তিনো, হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন মাঠে। শেষ ২ মিনিট সামলে নিলেন, যেন বরফশীতল হয়ে জমে গিয়েছিলেন। শেষ বাঁশি বাজার পর জয় উদযাপনে ডাগ আউট ছেড়ে মাঠে দৌড়ও দিতে পারলেন না, ম্যাচে দর্শক হয়ে থাকা হ্যারি কেইন কোচের মাথা ঝাঁকিয়ে দিলে যেন চেতনা ফিরে পেলেন, ফিরে যান প্রতিপক্ষ কোচ টেন হ্যাগের সঙ্গে হাত মেলাতে। আয়াক্স কোচকে সান্ত¡না দেওয়ার পর আবেগ সামলাতে পারেননি পোচেত্তিনো। সামনে ক্লাবের যাকে পেয়েছেন, তাকে জড়িয়ে ধরে ছেলে মানুষের মতো কেঁদেছেন। ম্যাচ শেষে ৪৭ বছরোর্ধ্ব আর্জেন্টাইন কোচের পেছনে ঘুরঘুর করেছে টিভি ক্যামেরা।
২৭ মে স্পার্সদের দায়িত্বে থাকার ৫ বছর পূর্ণ হবে পোচেত্তিনোর। তার চার দিন পর মাদ্রিদে লিভারপুলের বিপক্ষে ফাইনাল। অবিশ্বাস্য স্বপ্ন পূরণের পথে পা রেখে উচ্ছ্বসিত স্পার্স কোচ, ‘অসাধারণ অনুভূতি, ফুটবল তোমাকে ধন্যবাদ। এমন অনুভূতি ফুটবল ছাড়া অন্য কিছু সম্ভব নয়। ধন্যবাদ যারা বিশ্বাস রেখেছিল। অনুভূতি বর্ণনা করা কঠিন।’ পোচেত্তিনোকে কাঁদতে দেখে আবেগী হয়ে পড়েন সাবেক ম্যানইউ মিডফিল্ডার ড্যারেন ফ্লেচার, ‘বাচ্চার মতো কাঁদছিল পোচেত্তিনো। যখন তারা শেষ গোল করল, তখন সে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল। তাকে এভাবে দেখা আবেগের, তার কাছে এ জয়ের অনুভূতি কেমন, দেখে আপ্লুত।’ টটেনহাম জার্সি জীবনে পরেননি এমন আরও অনেক সাবেক খেলোয়াড়ও হয়েছেন হতভম্ব। সাবেক ডিফেন্ডার রিও ফার্ডিনান্ড বলেন, ‘যা ঘটল বাকরুদ্ধ করে দিতে যথেষ্ট। তীব্র আকাক্সক্ষা ও প্রচেষ্টা থাকতে হবে, নিজের মনপ্রাণ উজাড় করে দিতে হবে।’