আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১০-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

সুরমা ও লোভা নদীর ভাঙন

কানাইঘাটে কয়েকটি গ্রাম হুমকির মুখে

সিলেট ব্যুরো
| নগর মহানগর

সিলেটের কানাইঘাটের সুরমা ও লোভা নদীর ভাঙনে নদী তীরের কয়েকটি গ্রাম রয়েছে হুমকির মুখে। ইতিপূর্বে সুরমার ভাঙনে কান্দেবপুর নামের একটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় গ্রামটির শতাধিক পরিবার সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছেন। আবার বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই নতুন করে এ দুই নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ কারণে আতঙ্কে দিন কাটছে নদী তীরের বেশ কয়েক’টি গ্রামের বাসিন্দাদের। এখনই ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা না নিলে কান্দেবপুর গ্রামের মতো এসব গ্রামের বাড়ি-ঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক স্থাপনাই নদীতে হারিয়ে যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে সঙ্গে সুরমা ও লোভায় ভাঙন শুরু হয়। নদী ভাঙন দিন দিন তীব্র থেকে তীব্র আকার ধারণ করায় নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষ্মীপ্রসাদ, উত্তর লক্ষ্মীপ্রসাদ, কুওরঘড়ি, সদর ইউনিয়নের গৌরীপুর এবং পৌরসভার ডালাইচর, গৌরীপুর, নয়ামাটি, বিষ্ণুপুর গ্রামসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা। এ ছাড়া সুরমার ডাইকেও ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে এসব এলাকার শিক্ষার্থী ডাইক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করছে। যে কোনো সময় নদী ভাঙনের ফলে ঘটতে পারে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী অবিলম্বে তাদের বাপ-দাদার ভিটে মাটি রক্ষায় নদী ভাঙন রোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। সোমবার ভোরে উপজেলার দক্ষিণ লক্ষ্মীপ্রসাদ গ্রামের মরা আমরির মুখ নামক স্থানে সুরমা ডাইকে বিশাল ফাটল দিয়ে নদী ভাঙন শুরু হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে তা ব্যাপক আকার ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সংবাদকর্মী আলাউদ্দিন বলেন, সোমবার ভোর থেকে সুরমার আমরির মুখ এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিনিয়ত নদীর তীর ভাঙছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ডাইকের প্রায় এক তৃতীয়াংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি জানান, গত বছর ভাঙন রোধে নদী তীরবর্তী এসব এলাকার বাসিন্দা দীর্ঘ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন। যার পরিপ্রক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা সেখানে গিয়ে এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং ভাঙন প্রতিরোধে বরাদ্দের আশ্বাসও দেন। কিন্তু কোনো ধরনের কাজ হয়নি। যে কারণে চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুর দিকে আবারও ভাঙন দেখা দেওয়াতে এলাকার জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি ক্ষোভেরও সঞ্চার হচ্ছে। 
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা।