আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১০-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

গারো পাহাড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মৌচাষ

আলোকিত ডেস্ক
| সুসংবাদ প্রতিদিন

শেরপুর জেলার গারো পাহাড় এলাকায় মৌচাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চাষ করা মধু আহরণের মাধ্যমে অনেক পরিবার স্বচ্ছল জীবনযাপন করতে শুরু করেছেন। মৌচাষের ফলে পরাগায়নের মাধ্যমে যেমন কৃষিতে ফলন বাড়ছে, তেমনি মধু বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছেন মৌচাষিরা।

সরেজমিন ঘুরে এবং জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শুধু সরিষার মৌসুমেই নয়, বরং সারা বছরই সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকার গজারি বনে বাক্সে মৌমাছি পালন করে মধু চাষ করছেন ৩ শতাধিক মৌচাষি। যারা বৃহৎ পরিসরে মৌচাষ করছেন তাদের ১০০ থেকে ২৫০টি বাক্স রয়েছে। আবার অনেকে পারিবারিকভাবে দুই থেকে চারটি বাক্সের মাধ্যমে মৌচাষ করছেন।

মূলত, উন্নত জাতের মেলিফেরা ও সিরেনাÑ এই দুটি জাতের মৌমাছি দিয়ে চাষিরা মধু সংগ্রহ করছেন। ১০০টি বাক্স থেকে বছরে ৪ থেকে ৫ টন মধু সংগ্রহ করা যায়। খরচ বাদ দিয়ে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। ঝিনাইগাতীর দুধনই গ্রামের মৌচাষি মো. আবদুল হালিম জানান, তিনটি বাক্স দিয়ে ওই এলাকার প্রথম মৌচাষি হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয়। সাত বছরে এসে এখন তার বাক্সের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০০। তিনি জানান, বছরে ১০০টি বাক্সের জন্য খরচ প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে তিনি বছরে ১০ থেকে ১১ লাখ টাকা আয় করেন। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে চার প্রজাতির মৌমাছি রয়েছে। এপিস মেলিফেরা, এপিস সিরেনা, এপিস ডটসাটা, এপিস ফ্লোরিয়া। এর মধ্যে এপিস মেলিফেরা ও এপিস সিরেনা জাতের মৌমাছি বাক্সে পালন করে তারা মধু আহরণ করছেন।

আবদুল হালিম বলেন, ১৫-২০ নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সরিষার মধু, জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কালিজিরা ও ধনিয়ার মধু, মার্চের শুরু থেকে লিচুর মধু এবং এপ্রিল থেকে গারো পাহাড়ে বনের মধু আহরণ করা হয়। তিনি আরও জানান, ঝিনাইগাতী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ৩০০ মৌচাষি দুই তেকে তিনটি করে বাক্সে এপিস সিরেনা মৌমাছি চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদন করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করছেন। বাকাকুড়ার পানবর এলাকা মৌচাষি কানুরাম কোচ জানান, শুরুতে তার ১৬টি বাক্স ছিল। ৫ বছরে ১০০ বাক্স হয়েছে। গারো পাহাড়ের মধু পাইকারি ১৬ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, শেরপুরের উপপরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, বিসিক ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা মৌচাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ মৌচাষিরা সরিষার ফুল ছাড়াও কালিজিরা, লিচু ও বনের ফুল থেকে মধু আহরণে মনোযোগী হচ্ছেন। এতে এ এলাকায় মৌচাষ ও মধু আহরণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সূত্র : বাসস