আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১০-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

পঞ্চম নিরাপদ সড়ক সপ্তাহের আলোচনায় বক্তারা

ক্ষমতার সঙ্গে যুক্তরাই আইন ভাঙছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
| শেষ পাতা

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেছেন, আমাদের দেশের মহাসড়কগুলো আন্তর্জাতিক মানের নয়। এসব সড়কে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানোর সুযোগ-সুবিধা থাকলেও চালানো হচ্ছে ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিবেগে। এর কারণে দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ভয়াবহতা বাড়ছে। আর ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই আইন ভাঙছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে পঞ্চম বিশ্ব নিরাপদ সড়ক সপ্তাহ উপলক্ষে ‘নিরাপদ সড়ক : আমাদের দায়িত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মহাসচিব বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হলো আইন না মানার প্রবণতা। ক্ষমতার সঙ্গে যারা যুক্ত তারাই আইন ভাঙছেন। ফলে দুর্ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা বাড়ছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য নাগরিকদের মধ্যে আইন মানার সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে, প্রতিবছর সারা বিশ্বে ১.২ মিলিয়ন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। আহত হয় ২০ থেকে ৫০ মিলিয়ন মানুষ। সংস্থাটির হিসাব মতে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে হতাহতের সংখ্যা (প্রতি ১ লাখ মানুষে যথাক্রমে ২১.৫ ও ১৯.৫ জন) উচ্চ আয়ের দেশগুলোর (১০.৩ জন) তুলনায় অনেক বেশি। গত চার থেকে পাঁচ দশক ধরে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পরিমাণ হ্রাস পেলেও এসব দেশে এখনও সড়ক দুর্ঘটনাকে মৃত্যু, আঘাত ও পঙ্গুত্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সংস্থাটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্তের ৪৮ শতাংশ পথচারী, সাইক্লিস্ট ও মোটরসাইক্লিস্ট। যাদের ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক ব্যবহারকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে তাদের মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি। সভায় বাজেটে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে একটি অর্থনৈতিক কোড চালুসহ সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চালক প্রশিক্ষণ, জনসচেতনতা সৃষ্টি, আক্রান্তদের উদ্ধার, চিকিৎসা সহায়তা ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা তথা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এসব খরচ মেটাতে বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বলেন আলোচকরা।
সভায় সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে জাতিসংঘের অনুস্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য চালক প্রশিক্ষণ, জনসচেতনতা সৃষ্টি, ডিজিটলি পদ্ধতিতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, বিআরটিএ’র সক্ষমতা ও জনবল বৃদ্ধি, লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি আধুনিকায়ন, ট্রমা সেন্টার চালু, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি ও মাদকমুক্ত করাসহ ১৫ দফা প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। যাত্রীকল্যাণ সমিতির আয়োজনে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, বিআরটিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমানসহ বিভিন্ন সংস্থার নেতারা।