রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের রাজপথ-রেলপথ অবরোধ আর বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল খুলনার খালিশপুর শিল্পাঞ্চল। বৈশাখের বৃষ্টিহীন তীব্র রোদও শ্রমিকদের আন্দোলন দমাতে পারছে না।
বকেয়া মজুরি প্রদান ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার টানা পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলনে নামে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা। এছাড়া বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নগরীর খালিশপুর নতুন রাস্তা মোড়ে ৩ ঘণ্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ করে শ্রমিকরা। অবরোধের পাশাপাশি শ্রমিকরা রাজপথে নামাজ আদায় ও ইফতারি করে। ৫ মে থেকে বকেয়া মজুরি পরিশোধের দাবিতে মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এদিকে রাজপথ-রেলপথ অবরোধের কারণে দূর-দূরান্তের যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
বুধবার দুপুরে ঢাকার বিজেএমসির সিবিএ কার্যালয়ে পাটকল শ্রমিক লীগ ও সিবিএ ও নন সিবিএ’র বৈঠকে ১৩ মে থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোতে ধর্মঘট চলাকালে প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাজপথ-রেলপথ অবরোধ এবং রাজপথে ইফতারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্র জানায়, খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকলে গড়ে প্রতিদিন ১০০ মেট্রিকটন পাটজাত পণ্য উৎপাদন হয়ে থাকে। সেই হিসেবে গেল চার দিনে ৩৫০ মেট্রিকটন পাটপণ্য উৎপাদন বঞ্চিত হয়েছে।
বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক ও ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মো. মুরাদ হোসেন বলেন, পবিত্র রমজানেও আমরা রাজপথে থালা-বাসন হাতে ভুখা মিছিল করছি। পথেই নামাজ পড়ছি, ইফতার করছি। কয়েক মাস হয় বাজার কাকে বলে জানে না শ্রমিকরা। ছেলে-মেয়েদের মুখে ভালো কোনো খাবার দিতে পারছে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন খুলনা অঞ্চলের (বিজেএমসি) সমন্বয়কারী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও পাওনা পরিশোধের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলে শ্রমিকদের ১১ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে ৫৮ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।