খুলনার কয়রা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ওজন বৃদ্ধির জন্য বাগদা চিংড়িতে সাগু ও জেলি পুশের অভিযোগ উঠেছে অসাধু ফড়িয়া চক্রের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্টরা অবাধে এ চিংড়ি বাজারজাত করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে চিংড়ির গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার শতাধিক খুচরা চিংড়ি ব্যবসায়ী স্থানীয় দেউলিয়া বাজার মৎস্য কাটাসহ অন্যান্য মৎস্য কাটা ও চিংড়ি ঘের থেকে প্রতিদিন বাগদা চিংড়ি কিনে নিজ নিজ ডিপো ও বাড়িতে নিয়ে মজুত করেন। সেখানেই নারী ও শিশু শ্রমিক দিয়ে পানি মিশ্রিত সাগু, জেলিসহ নানা অপদ্রব্য পুশ করে। ২ থেকে ৩ ঘণ্টা ধরে পুশ কার্যক্রম শেষে ড্রামভর্তি বিপুল পরিমাণ বাগদা চিংড়ি ভ্যানে উঠিয়ে বেলা ১১টার পর মৎস্য কাটায় নিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। বিকাল ৩টার পর ট্রাক ও মিনি ট্রাক ভর্তি করে চিংড়ি দেউলিয়া বাজার মৎস্য কাটা থেকে খুলনা ও ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হতে দেখা যায়। সূত্র জানায়, কয়রা সদরের ১নং মাঝের আইট, ৬নং কয়রা, কাটকাটা, কাশিরহাট, দেয়াড়া, হোগলা, চাঁদালি ও ফুলতলাসহ উপজেলার শতাধিক জায়গায় চিংড়িতে দেদারছে অপদ্রব্য মেশানো হচ্ছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অসাধু চক্রগুলো পুশ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। যদিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাঝেমধ্যে মৎস্য কাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করেন। তারপরও থেমে নেই এ বে-আইনি কার্যক্রম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শ্রমিক জানান, পানি মিশ্রিত সাগু ও জেলি পুশ করায় প্রতি কেজি বাগদা চিংড়ির ওজন ১ হাজার ১০০ গ্রাম থেকে ১ হাজার ৫০০ গ্রাম হয়। ফলে প্রতি কেজি চিংড়িতে অতিরিক্ত ৫০ থেকে ৬০ টাকা বাড়তি আয় হয় তাদের। চিংড়ি রপ্তানিকারকদের সূত্র জানায়, পুশ করা চিংড়ি বিদেশে রপ্তানির পর চিংড়ির গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বহুবার। চিংড়ির আমদানিকারক দেশগুলো অনেকবার পুশের দায়ে বাংলাদেশের হিমায়িত চিংড়ির বড় চালান ফেরতও দিয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আলাউদ্দিন জানান, চিংড়িতে পুশ করা দ-ণীয় অপরাধ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।