আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

রমজানুল মোবারকের অনুশীলন

সহিহ-শুদ্ধ তেলাওয়াত

মুহাম্মাদ ইমদাদুল হক ফয়েজী
| তাসাউফ

অফুরান করুণা, কল্যাণ, ক্ষমা, পুণ্য আর মুক্তির শাশ্বত পয়গাম নিয়ে আমাদের মাঝে আবারও স্বমহিমায় এসে হাজির রমজানুল মোবারক। তাকওয়ার সোপান সিয়াম সাধনার পাশাপাশি সালাতুত তারাবি, তাহাজ্জুদ, কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত ও বিভিন্ন ইবাদতে অন্যান্য মাসের তুলনায় অধিক মনোযোগী ও মশগুল হবেন আল্লাহর প্রিয় বান্দারা। ইবাদতের বসন্তকাল মহিমান্বিত এ মাসে একটি নফল ইবাদাত অন্য যে কোনো মাসের ফরজ এবং একটি ফরজ ইবাদতের সওয়াব সত্তরটি ফরজ ইবাদতের সমতুল্য বলে প্রিয় নবীজি (সা.) এর ঘোষণা দিয়েছেন। অপার বরকতময় এ মাসে আল্লাহ তায়ালা তাঁর হাবিব প্রিয় নবীজি (সা.) এর ওপর মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাজিল করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) এর জীবদ্দশায় প্রতি রমজান মাসে জিবরাইল (আ.) নবীজি (সা.) এর কাছে আসতেন, কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত করতেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) শুনতেন। আবার নবীজি (সা.) তেলাওয়াত করতেন জিবরাইল (আ.) শুনতেন। এ মাস মোমিনদের জন্য মহান প্রভুর পক্ষ থেকে মহা অনুগ্রহ ও বিশাল নেয়ামত। এ মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জনের, অবারিত পুণ্য চাষের মৌসুম। এটি কোরআন নাজিলের মাস, কোরআন অধিক থেকে অধিকতর তেলাওয়াতের মাস, কালামুল্লাহ শরিফ শেখা ও শেখানোর মাস। পৃথিবীর অগণিত মসজিদে সালাতুত তারাবি ও নফল সালাতে অগণিত অসংখ্যবার তেলাওয়াত ও খতম হবে পবিত্র কোরআনের। ভূ-গোলকের পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র সর্বস্তরের মোমিনরা কোরআন তেলাওয়াত শেখা-শেখানো, বোঝা-বোঝানো এবং কোরআনের আলোকে জীবন ও সমাজ সাজানোর কাজে অপরাপর মাসের তুলনায় অধিক মনোযোগী হন এ মাসে। এর ব্যতিক্রম নয় আমাদের সবুজ-শ্যামল প্রিয় মাতৃভূমিও। আলহামদুলিল্লাহ, বিভিন্ন বোর্ড, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান সর্বস্তরের মানুষকে সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত শিক্ষা দিতে রমজান মাসব্যাপী কোরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করে কোরআন শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং মহান এ কাজ আরও বিস্তৃত করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আল্লাহ তায়ালা তাদের নিষ্ঠাপূর্ণ কাজের উত্তম বিনিময় দান করুন। মহান এ কাজে আমাদের সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে। নিজেকে, পরিবারের সব সদস্যকে, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনসহ প্রতিটি মোমিন ভাইবোনকে শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াতে সক্ষম করতে সচেষ্ট হতে হবে। বিশেষত রমজান মাসে এটিকে আমাদের মিশন হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ঐশীগ্রন্থ আল কোরআন এবং মহিমান্বিত রমজানুল মোবারকের অন্যতম দাবিও এটি আমাদের প্রতি। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেনÑ ‘তোমরা শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করো।’ (সূরা মুজ্জাম্মিল)। 

অন্যদিকে মহৎ এ কাজে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে আমরা হয়ে যাব উম্মতের শ্রেষ্ঠ মানুষ। রাহমাতুল্লিল আলামিন (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি সেই, যে কোরআন শিক্ষা করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়।’ (বোখারি)।
আসুন, কোরআন শিক্ষা-কার্যক্রমে অংশ নিই, শ্রেষ্ঠ মানুষ হই। কোরআনের আলোয় আলোকিত হোক আমাদের জীবন, উদ্ভাসিত হোক পুরো বসুন্ধরা।