আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

রাজশাহীতে জাপানি ইউস্তোমা ফুল

রিমন রহমান, রাজশাহী
| নগর মহানগর

জাপানের একটি জনপ্রিয় ফুল ‘ইউস্তোমা। টিস্যুকালচারের মাধ্যমে রাজশাহীতে এ ফুলের গাছ তৈরি করেছেন একজন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী। মতিউর রহমান নামের তরুণ এ বিজ্ঞানী দীর্ঘ ছয় বছরের গবেষণা ও পরিচর্যার পর এখন এ ফুলের চারা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রিও করতে পারছেন।
মতিউর রহমানের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার উজানখলসী গ্রামে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ¯œাতক, ¯œাতকোত্তর ও এমফিল করেছেন। এখন পিএইচডি করছেন। মতিউরের মায়ের নাম অলোকা বেগম। মায়ের প্রতি সম্মানে তিনি তার উদ্ভাবিত ইউস্তোমা ফুলের নাম রেখেছেন ‘অলোকা’।
টিস্যু কালচার নিয়ে গবেষণায় মতিউর রহমানের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নাম ‘এগ্রোব্যাক’। নিজের গ্রামেই তিনি এ গবেষণাগার গড়ে তোলেন। সেখানেই টিস্যুকালচারের মাধ্যমে একটি পাপড়ি থেকে তৈরি করেন ইউস্তোমা ফুলের গাছ। উজানখলসী গ্রামের ওই গবেষণাগারের পাশের একটু জমিতেই এখন ফুটে আছে ইউস্তোমার গোলাপী, বেগুনী, সাদা, লালসহ কয়েক রঙের ফুল। 
মতিউর রহমান জানান, ধারণা করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের রকি পর্বত এলাকায় এ ফুলের উৎপত্তি। তবে এটা জাপানে ভীষণ জনপ্রিয়। অস্ট্রেলিয়াতেও এ ফুল পাওয়া যায়। তিনি জাপান থেকে আনা একটি ফুল থেকে পাপড়ি নিয়ে টিস্যুকালচারের মাধ্যমে গাছ তৈরি করেন। কাজ শুরুর আট মাস পর বোতলের মধ্যে চারা হয়। এটা বের করে ১৮ মাস বাইরের পরিবেশে রাখেন। তারপর মাটিতে রোপণ করেন। এর ৬৫ দিন পর গাছে ফুল ফোটে। গেল ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে তিনি প্রায় ১০ হাজার চারা তৈরি করতে সক্ষম হন। এর মধ্যে আট হাজার চারা বিক্রি করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুরে মতিউরের প্রদর্শনী খামার পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির (বিএফএস) সাধারণ সম্পাদক ইমামুল হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর। তারা জাপানি এই ফুল দেখে অভিভূত হন। তারা সেখান থেকে ফুলের ২০০টি স্টিক কিনে নিয়ে যান। ইমামুল হোসেন বলেন, এই ফুল আমরা জাপান থেকে আমদানি করি। বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে উৎপাদন করা গেলে আমদানি করা লাগবে না। এটি চাষ করলে চাষিরা লাভবান হবেন।
এগ্রোব্যাকের পরিচালক মতিউর রহমান জানান, দেশে এ ফুলের খুব চাহিদা রয়েছে। বিদেশ থেকে যেসব ফুল আসে তার প্রতিটা স্টিক বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়। প্রতিটা স্টিকে ফুল থাকে চার থেকে পাঁচটা। তবে প্রচারণার অভাবে গেল বছর তাকে ৩৫ থেকে ৮০ টাকায় স্টিক বিক্রি করতে হয়েছে।