আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

হাঁটা শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম

মির্জা আবু হেনা কায়সার টিপু
| সম্পাদকীয়

মানুষের পূর্বপুরুষ যদি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় নির্ণয় হয়েই থাকে, তাহলে বানরকুলের প্রাণীটিই মানুষের অতীত বংশ অস্তিত্ব। বানর প্রকৃতির প্রাণীরা দৌড়ঝাঁপ-লাফালাফি পছন্দ করে। জেনেটিকগত স্বভাবটা মানুষের মাঝেও আছে। যদিও গাছে গাছে আধুনিক মানুষ ঝুলে বেড়াতে পছন্দ করে না। কিন্তু দৌড়ঝাঁপ-খেলাধুলায় মানবজাতির আগ্রহের কমতি নেই। এটা আসলেই বাঁদরামি স্বভাবের বংশীয় অংশ। এসবে মানুষ সুস্থ থাকে। ভালো থাকে শরীরের কর্মচঞ্চলতা। ক্লান্তিহীনতা দূর করে মানুষ আত্মবিশ্বাসী ও দুরন্ত হয়ে ওঠে। 
মানুষের মাঝেও পরিবর্তনশীল মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করে এ শারীরিক কসরত। যারা এসবের সঙ্গে যুক্ত তাদের শরীর-মন সবসময় উৎফুল্ল ও প্রফুল্ল থাকে চঞ্চল বানর সম্প্রদায়ের মতো। আদি মানুষের অবয়ব আসলেই বানর। বিজ্ঞান প্রমাণহীন যুক্তি নিয়ে কখনও প্রতিষ্ঠা পায় না। বানরের আধুনিক ভার্সন বুদ্ধিমান মানুষের এ চলমান যাত্রা পৃথিবীকে ধন্য করেছে, করেছে বিস্ময়। মানুষের হাতে এখন সৃষ্টির দুর্বার কৌশল। এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত সীমাহীন গন্তব্যের পথে।
পিছিয়েও যাচ্ছে প্রকৃতি থেকে, ছিটকে যাচ্ছে শরীরের প্রকৃতি স্বভাব কৃত্রিমতায়। মানুষ ভালো নেই শরীর মনে। সব মানুষ খেলোয়াড় নয়। ব্যায়াম অভ্যস্ত নয়। নয় দৌড়ঝাঁপে আগ্রহী। সেসব মানুষের সুস্থতার এক অসাধারণ কৌশল আছে মানুষেরই পছন্দ অপছন্দ এসবের বাইরে এক সরল পদ্ধতি। শুধুই দুই পা সজোরে চালানো। আর কিছুই নয়। এর ওপরে কোনো ব্যায়াম নেই। সহজ কথা যত হাঁটবেন তত বাঁচবেন। হাঁটার উপকারের শেষ নেই; কিন্তু অপকার এক বিন্দুও নেই। হাঁটা শরীরের প্রতিটি বিন্দুকে নাড়িয়ে দেয়, প্রতিটি বিন্দুকে ত্বরান্বিত করে ও সচল করে প্রাকৃতিকভাবে। হাঁটা সর্বরোগের মহৌষধ। হাঁটতে পারলে, হাঁটতে শিখলে নিয়মিত শরীর সুস্থ থাকবেই। মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম হাঁটা। সময় পেলে শুধুই হাঁটুন, হাঁটতে থাকুন প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে, কোনো ক্ষতি নেই শুধুই মঙ্গল। মাইলের পর মাইল হেঁটে যান আপন মনে। যত দ্রুত করা যায় গতি, হাঁটুন প্রাণ খুলে আপন খেয়ালে। হাঁটাকে ভালোবাসুন। শরীর ভালো থাকবেই। ছোট্ট উদাহরণ দিয়ে লেখা শেষ করছি। মহা মানব মহাত্মা গান্ধী অনেক অসুখের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন দীর্ঘজীবনে। তারপরও তিনি ছিলেন উচ্ছল-চঞ্চল-তারুণ্যনির্ভর সারাজীবন। সেটা সম্ভব করেছে তার নিয়মিত হাঁটাচলা ও স্বল্পআহার। হাঁটাই ছিল বাপুজির জীবনের এক বড় একটি নিজস্বতা ও আর্ট। বিশ্ব দরবারে একজন হাঁটার মডেলও তিনি। প্রতিদিন গড়ে ১৮ মাইল হাঁটতেন। সব মিছিল মিটিংয়ে অংশ নিতেন দলবল নিয়ে হেঁটে। হাঁটতে পারলেই জীবন সুন্দরে ভরে ওঠে নিশ্চিত। হ

কবি, লেখক, অভিনয়শিল্পী 
উত্তরা, ঢাকা