আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

পোশাকে উৎসব

আবদুল মান্নান
| আলোকিত জীবণশৈলী

পাঞ্জাবি : মুসলিম কালেকশন

ঈদের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো তাদের বিক্রয় কেন্দ্রে ঈদের পোশাক ঝুলিয়েছে। বরাবরের মতো এবারও একেক ফ্যাশন হাউস একেক থিম বা মোটিফ নিয়ে কাজ করেছে। ফ্যাশন ডিজাইনারদের মতামতÑ খুব আহামরি কিছু পরিবর্তন আসছে এমন নয়। আবার একেবারেই কিছু আসেনি সেটা ভাবাও ঠিক নয়। কারণ ফ্ল্যাশব্যাকে গত কয়েক বছরের ঈদ পোশাকের হালচাল দেখে তা-ই মনে হয়। তবু ভালো বা বড় হাউসগুলো প্রতি বছরই পরিবর্তন করে বা করার চেষ্টা করে। অবশ্য ভালোমন্দ সব বিবেচনা করেন ক্রেতারাই। 
আড়ংয়ের ফ্যাশন ডিজাইনার ফয়েজ হাসান বলেন, আড়ং বরাবরের মতো এবারও তাদের ঈদ পোশাকের নকশায় নতুনত্ব যোগ করেছে। সে ধারাবাহিকতায় আড়ংয়ের এবারের ঈদ পোশাকের নকশায় দেখা যাবে ইস্তানবুল ও মরক্কো অঞ্চলের বাড়ি বা বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যবহৃত টাইলসের নকশা। মূলত এসব টাইলসের নকশায় এক ধরনের ইসলামিক মোটিফ প্রকাশ পেয়ে থাকে। সেই মোটিফ অবলম্বনেই নকশা দেখা যাবে পোশাকে। এছাড়া এবার আড়ং পার্টি ড্রেসটাকে প্রাধান্য দিয়েছে। রয়েছে জমকালো পার্টিড্রেস। গর্জিয়াস করতে এসব পার্টি ড্রেসে ডার্কের প্রাধান্য আছে। গ্রীষ্মের কথা মাথায় রেখেও পোশাক করা হয়েছে। অবশ্য এবার প্রায় সব হাউসই গ্রীষ্মকে প্রাধান দিচ্ছে। কারণ ঈদটা একদম গ্রীষ্মের ভেতর পড়ছে। এসবের পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ট্রেন্ডের ধারা অনুযায়ী সাব কালচার বা উপজাতীয়দের সংস্কৃতির মোটিফও হয়তো দেখা যাবে অনেকের পোশাকে।
বাজার ঘুরে দেখা গেলÑ বরাবরের মতো এবারও দেশীয় ঘরানার বাইরে অন্য হাউসগুলো পশ্চিমাঘেঁষা ডিজাইনের আদলেই পোশাক এনেছে বা আনছে। আবার দেশীয় ঘরানার কিছু হাউসে ক্ল্যাসিক-ট্রেন্ডি দুটিরই প্রাধান্য আছে। তবে ক্ল্যাসিক-ট্রেন্ডি যাই হোক, অনেক হাউসের পোশাকেই লুকিং বা পলিশে নজর কম রয়েছে। অবশ্য কাটিং বা পেটার্নে আধুনিকায়নটাই লক্ষণীয়।
ফ্যাশন ব্র্যান্ড আর্টিজ্যানের কর্ণধার রাকিব হোসেন বলেন, ঈদ পুরোপুরি গ্রীষ্মে হওয়ায় গ্রীষ্মকে প্রাধান্য দিয়ে কালারফুল ও আরামদায়ক কাপড়েই করা হয়েছে আমাদের পোশাক। অবশ্য অন্য অনেকেই একই কাজ করেছেন। ফ্যাশন ডিজাইনার আরিফ বলেন, কয়েক বছরের মতো মেয়েদের পোশাকে ফিউশন কাট আর ডাবল লেয়ারের প্রচলনটা এবারও থাকছে। তা লং কিংবা শর্ট সব পোশাকের ক্ষেত্রেই বা শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টপসÑ সব ক্ষেত্রেই। এছাড়া কয়েক বছরের মতো এবারও ছেলেদের বেলায় কালারফুল প্রাধান্য পাচ্ছে। পাশাপাশি প্রিন্টের চাহিদা দেখা যাচ্ছে। তবে প্যাটার্ন বা কাটিংয়ে খুব যে পরিবর্তন আসছে এটা নিশ্চিত নয়। সেটা শার্ট কিংবা প্যান্টের বেলায়ও। 
তবে সব মিলিয়ে বলতে গেলে অন্য ফ্যাশন ব্র্যান্ডের তুলনায় দেশীয় ঘরানার ফ্যাশন হাউস খুবই কম। তাই মোটাদাগে বাজার বলতে পশ্চিমা ঘরানাই চোখে বেশি পড়বে। আর তার প্রভাবেই ক্রেতারা প্রভাবিত হন। অবশ্য দেশীয় পোশাকের প্রতিও মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। আর সেসব ক্রেতাই খোঁজেন নিজস্বতা।
বসুন্ধরা সিটির দেশীদশে কেনাকাটা করতে এসেছেন ধানমন্ডির আরিফা বেগম। তিনি বলেন, প্রতি বছরই ফ্যাশন হাউসগুলো ঘোষাণা দেয় নতুন ডিজাইনের পোশাকের। তবে ঘুরে-ফিরে একই ধাঁচের। শুধু লালের জায়গায় নীল, আর নীলের জায়গায় লাল দেয়Ñ এই আরকি। আবার তারা বলে বেড়ান দেশীয় সংস্কৃতির কথা। কিন্তুও ভারতীয় পোশাকের নমুনা বা পশ্চিমা ঢংয়ের নমুনাও তাদের পোশাকে মেলে। তবে এসবের মধ্যে ভালো একটা দিক হলোÑ অনেক ফ্যাশন হাউসই পরিবারের সবার জন্য এবং কাপলদের জন্য একই রঙ ও নকশার পোশাক করে থাকে। এটা ভালো লাগে। এছাড়া অল্প হলেও অনেক হাউসই নতুন কিছু করার চেষ্টা করে, সেটাও ভালো লাগে।