কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে চাঞ্চল্যকর নার্স শাহিনুর আক্তার তানিয়াকে দল বেঁধে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ। কারা এ ঘটনায় জড়িত তা খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতি জানতে পারবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ দিচ্ছে এমন খবর অস্বীকার করেছেন নিহতের পরিবার ও স্বজনরা। তারা এ মামলায় জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। অপরদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় মানববন্ধন, অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানিয়েছেন, যে বাসটিতে তানিয়াকে ধর্ষণ করা হয়েছিল, সেই বাসটি গাজীপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাসে রক্তের দাগ থাকার কথাও তিনি স্বীকার করেছেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাদীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে মর্মে যে সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে তা মিথ্যা দাবি করে তানিয়ার পরিবারের লোকজন জানান, তাদের ওপর কোনো চাপ নেই। তানিয়ার পরিবার এজাহারনামীয় অন্য আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে তানিয়াকে ধর্ষণের পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে পিরিজপুরের সততা ফার্মেসিতে এনেছিলেন বাসের চালক, হেলপার ও একজন মোটরসাইকেল চালক। সততা ফামেসির মালিক হাবিবুর রহমান তানিয়ার অবস্থা খারাপ দেখে দ্রুত ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেলে নেওয়ার পরামর্শ দিলেও চালক ও হেলপার তানিয়াকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তিনি আরও জানান, সততা ফার্মেসিতে আনার সময় তানিয়ার হাত ও পা ভালো ছিল। কটিয়াদি হাসপাতালে আনার সময় আবারও নির্যাতন করে তানিয়ার ডান হাত ও পা ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এদিকে তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় মানববন্ধন, অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা। আন্দোলনকারীরা দ্রুত বিচারের মাধ্যমে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানান। এ হত্যাকা-ের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত বাসচালক গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সালুয়াটেকি গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে নূরুজ্জামান, বাসের হেলপার একই উপজেলার বীর উজলি গ্রামের মৃত আবদুুল হামিদের ছেলে লালন মিয়া, একই উপজেলার লোহাদি গ্রামের নজর আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম রফিক, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ভোগপাড়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া ও বাজিতপুর উপজেলার নীলক্ষ্মী গ্রামের মৃত আবদুস শহীদের ছেলে বকুল মিয়া ওরফে ল্যাংড়া বকুলকে আট দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বাজিতপুর থানা পুলিশ। কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, চাঞ্চল্যকর তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলাটি সুচারুভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। রিমান্ডে থাকা আসামিরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। খুব দ্রুতই এ ঘটনায় জড়িতদের নাম জাতি জানতে পারবে বলে জানানো হয়।