আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

রোজাদারের তৃষ্ণা মেটাতে ভরসা আখের রস

রাজশাহী ব্যুরো
| খবর

রাজশাহীতে চলছে তাপপ্রবাহ। এ তাপমাত্রায় রোজা রেখে ঘরের বাইরে গেলেই তৃষ্ণার্ত হয়ে উঠছে মানুষ। তাই তৃষ্ণা মেটাতে রোজাদাররা ভরসা রাখছেন আখের রসে। অন্য ইফতারি সামগ্রীর পাশে থাকছে আখের রস।

রাজশাহী মহানগরীর প্রায় প্রতিটি মোড়ে মোড়েই এখন আখের রস বিক্রি হচ্ছে। দুপুরের পর থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত জোরতালে চলছে রস বিক্রি। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গরমের দিনে এমনিতেই তাদের রসের ব্যাপক চাহিদা। রোজার কারণে এ চাহিদা আরও বেড়ে গেছে। তবে চাহিদা বাড়লেও বাড়েনি দাম। প্রতি গ্লাস আখের রস আগের মতোই বিক্রি করা হচ্ছে ১০ টাকায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর অক্ট্রোয় মোড়ে আখের রস কিনছিলেন ব্যবসায়ী তাসিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, সারা দিন রোজার রাখার পর তৃষ্ণা মেটায় এক গ্লাস আখের রস। এজন্য তিনি প্রতিদিনই আখের রস কিনে নিয়ে যান। এরপর ফ্রিজে রাখেন। ইফতারে পরিবারের সবাই এ রস পান করেন।
রস বিক্রেতা টুটুল হোসেন বলেন, দুপুরের পর থেকে তার রস বিক্রি বেড়ে যায়। শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যন্ত্রে আখ থেকে রস বের করে দিতেই তাকে হিমশিম খেতে হয়। আগে সারা দিনে দুই মণ আখের রস বিক্রি হলেও রমজান মাস শুরুর পর দুপুরের পর থেকেই রস বিক্রি হচ্ছে আড়াই থেকে তিন মণ আখের। এতে ব্যবসা বেশ জমে উঠেছে বলেই জানান রস বিক্রেতা টুটুল হোসেন।
নগরীর সাহেববাজার, মনিচত্বর, রেলগেট, শালবাগান, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় টুটুলের মতো অনেককেই আখ থেকে রস বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। সাহেববাজারের বিক্রেতা জামিরুল হক বলেন, গরমের কারণে রস বিক্রি বেড়েছে। ইফতারির জন্য রোজাদাররা বোতলে ভরে রস বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ বোতল না আনলে তিনি নিজেই পলিথিনে আখের রস ভরে দিচ্ছেন। আখ কেনা থেকে শুরু করে যাবতীয় খরচ বাদেও তার দিনে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা লাভ থাকে।
এদিকে রোজাদারের তৃষ্ণা মেটালেও এ রস নিয়ে সতর্ক থাকতে বলছেন চিকিৎসকরা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মাহবুবুর রহমান বাদশা বলছেন, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে আখের রস বিক্রি হলে তা নিশ্চিন্তে পান করা যাবে। এতে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারই হবে। কিন্তু অনেক স্থানেই দেখা যায় আখের ওপর মাছি ভিন ভিন করে। সেসব রস পান করলেই বিপদ। সারা দিন রোজা রাখার পর এসব রস পান করলে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে আখ থেকে রস বের করা হলে তা পানে খুব উপকার আছে বলেও জানান ডা. মাহবুবুর রহমান বাদশা। তিনি বলেন, আখের রসে প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন এবং মেঙ্গানিজ রয়েছে। এ খনিজগুলো শরীরে ইলেকট্রোলাইটসের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। এছাড়া আখের রস শরীরে পানির মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। ক্লান্তি দূর করে। সংক্রমণ কমায়। তাই রোজাদারদের স্বাস্থ্যের জন্য আখের রস খুব উপকারী।