আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

দুই দিন পর বৃষ্টি!

নিজস্ব প্রতিবেদক
| প্রথম পাতা

তাপপ্রবাহের কারণে সারা দেশে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। কিন্তু এ তাপপ্রবাহর থেকে মুক্তি পেতে সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। 

শুক্রবার বিকালে আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ১২ মে রাত থেকে সারা দেশে বৃষ্টি নামতে পারে। তবে রাতে না নামলেও ১৩ মে সারা দিন বৃষ্টি থাকবে। তিনি বলেন, শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাজশাহীতে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

সংশ্লিষ্টরা বলেন, সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় কয়েক দিনের তীব্র গরমে হাঁপিয়ে উঠেছে মানুষ। এর আগে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র কারণে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টিপাত হয়েছিল। এরপরই ওইসব স্থানে তাপপ্রবাহ কমে যায়। তবে এরপর আবারও 

বেড়ে যায় গরম। তীব্র গরমে দেশের কয়েকটি জায়গায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই।
এদিকে রাজধানীর মানুষ রয়েছে চরম ভোগান্তিতে। শহরে রয়েছে খাবার পানির সংকট। মানুষ খাবার পানির চাহিদায় রাস্তার পাশে দূষিত পানি ও শরবত পান করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এজন্যই সামান্য বৃষ্টি হলেই স্বস্তি ফিরবে রাজধানীবাসীর। আর এ তীব্র গরমের মধ্যেই স্বস্তির খবর দিল আবহাওয়া অফিস।
শুক্রবার সরেজমিন ধানমন্ডি ও লালবাগ ঘুরে দেখা গেছে, প্রচ- তাপে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রীতিমতো হাঁপাচ্ছেন। দরদর করে ঝরছে ঘাম। অনেকে রোদের তাপ থেকে বাঁচতে ছাতা ব্যবহার করলেও ঝলসানো রোদে তারাও ঘামছেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে গরমে ক্লান্ত হয়ে রিকশাচালকদের কেউ কেউ রিকশার ওপরে ঘুমাচ্ছেন আবার কেউবা রিকশার পাশেই বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন।
এদিকে বরিশাল ব্যুরো জানায়, রমজানের শুরুতেই গরমে হাঁসফাঁস করেছে বরিশালের নগরবাসী। গেল ক’দিন ধরে গরমের তীব্রতা যেন প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শুক্রবার বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গরমের এ তীব্রতা তিন থেকে চার দিন থাকতে পারে। এদিকে ভয়াবহ গরমে নগরীতে নানা রোগশোক ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার জুমার নামাজে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন মুসল্লিরা। গরমের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, ঘর থেকে বের হতেই অস্বস্তি বোধ করছে সাধারণ মানুষ। এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে কয়েকদিন ধরে নগরজুড়ে। নগরীর প্রাণকেন্দ্র বিবির পুকুর সংলগ্ন একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট মাহবুবুর রহমান পিন্টু বলেন, দুপুরে দর রোড ও বিবির পুকুরের আশপাশ যেন খাঁ খাঁ করছিল। সাধারণ মানুষ দেখাই যায়নি সড়কে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গরমের তীব্রতার কারণে রমজানের ইফতার সামগ্রীর দোকানেও ক্রেতা ছিলেন কম। কেবল নগরীই নয়, ভয়াবহ এ গরম জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিনের গরমে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিদিনই ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে। সিট স্বল্পতায় অনেকেরই স্থান হচ্ছে মেঝেতে। তিনি এ অবস্থায় শিশু ও বৃদ্ধদের যথাসম্ভব কম তাপমাত্রার আরামদায়ক স্থানে রাখতে এবং কোমল পানীয় পান করানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আবদুল কুদ্দুস বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র আগে ২৪ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রার সে অবস্থা আবারও কাছাকাছি চলে আসছে। শুক্রবার নগরীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন বৃহস্পতিবার ছিল সর্বোচ্চ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পর্যবেক্ষক কুদ্দুস বলেন, বাতাসের আর্দ্রতা এখন বেশি। তাই গরমও তীব্র। এ অবস্থা সোম কিংবা মঙ্গলবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে তার ধারণা।