আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১২-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

শিক্ষার্থীদের মনোজগৎ বিনির্মাণে সমাজ কতটা সহায়ক

বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষার্থীর মানসিক আশ্রয় বলতে কিছু নেই, না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, না পরিবারে, না সমাজে, না রাষ্ট্রে। অবিরাম সে প্রত্যাশার চাপের মাঝে পার করছে তার যাপিত দিনগুলো। ফলে সে আশ্রয় খোঁজে অনলাইনে, ফেইসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপে কিংবা ইমুতে

রায়হান আহমেদ তপাদার
| সম্পাদকীয়

শিক্ষার্থীদের মনোজগৎ বিনির্মাণে সমাজ কতটা সহায়ক ভূমিকা পালন করছে, তা আমাদের দেখতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমাজেরই একটি অংশ। শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতিগত ত্রুটি যতটা না এক্ষেত্রে মুখ্য, তার চেয়ে বেশি দায়ী আমাদের অসুস্থ ও স্থূল মানসিকতা। আমরা নিয়মনীতির কথা মুখে বললেও সন্তানদের সে শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাই না। খেলা বা বিতর্কের মধ্য দিয়ে আমরা যেমন জয়কে ধারণ করা শিখি, তেমনি পরাজয়কে বরণ করাও শিখি। এগুলো জীবনের বাস্তব শিক্ষা। পাঠ্যবইয়ের বাইরে শিক্ষার্থীদের প্রচুর বই পড়ার অভ্যাস পারিবারিকভাবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে গড়ে উঠতে হবে, সাংস্কৃতির চর্চা করতে হবে, খেলাধুলা, নৈতিকতার চর্চা করতে হবে। জীবনের হাসি-কান্নার মধ্যেও এক অপূর্ব মাধুর্য আছে, যা শিক্ষার্থীদের শেখাতে হবে। বিভিন্ন পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারলাম, নুসরাত জাহান রাফিকে দুর্নীতি-দুষ্কর্মের সিন্ডিকেটের শিরোমণি সিরাজ-উদ-দৌলার নির্দেশেই (সে কারাবন্দি আছে বটে; কিন্তু তার পেটোয়া বাহিনী তো মুক্ত) বর্বরতার বলি হতে হয়। শেষ পর্যন্ত নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে কাতরাতে কাতরাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এ মর্মন্তুদ, ব্যাখ্যাতীত ঘটনা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। ফেনীর সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির জীবন নিয়ে বিপদাশঙ্কা তো আগেই দেখা দিয়েছিল। অধ্যক্ষ কর্তৃক যৌন নিপীড়নের শিকার নুসরাত জাহান রাফি প্রতিকার চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করেছিলেন। থানা-পুলিশ তার পাশে দাঁড়ায়নি। থানার তখনকার বড় কর্তা অর্থাৎ ওসি সাহেব ওই অধ্যক্ষকে রক্ষার কসরত করেছেন; রাফিকে উল্টো ফাঁসাতে চেয়েছেন।
এমনকি অগ্নিদগ্ধ নুসরাত যখন ক্রমেই এগোচ্ছিল জীবন নিয়ে বিপদাশঙ্কার পথে, তখনও ওই ওসির ভূমিকা ছিল ঘৃণ্য। নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যু শুধু তার স্বজন ও সহপাঠীদেরই কাঁদাচ্ছে না; গোটা বাংলাদেশকেই কাঁদাচ্ছে। এখন পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে যেসব খবর এসেছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের যেসব বিবরণ জানা গেছে, তাতে স্পষ্টতই ধারণা করা যায়, এটা পরিকল্পিত হত্যাকা- এবং এ হত্যাকা-ের মূল হোতা ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা। আজ আমাদের কোনো আর্তনাদই নুসরাতকে আর ফিরিয়ে আনতে পারবে না। কিন্তু হত্যার দ্রুত বিচার এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তযোগ্য দ- নিশ্চিত হলে সমাজের অন্য অপরাধীদের কাছে এ বার্তাটা পৌঁছাবেÑ দুষ্কর্ম করে পার পাওয়ার পথ রুদ্ধ। নুসরাতের স্বজনরাও এ সান্ত¦নাটুকু পাবেনÑ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। একমাত্র এ পন্থায়ই অবসান ঘটাতে পারে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতির। এভাবেই আইনের শাসনের পথটি সুগম করা যেতে পারে। যারা নুসরাতের হত্যাকারী, তার ওপর অত্যাচারের প্ররোচনাকারী এবং মূল হোতা মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে বাঁচাতে যারা মিটিং-মিছিল করেছে, তারাও অপরাধী হিসেবে মনে হয় গণ্য হতে পারে। একই সঙ্গে মূল্যবোধের যে সংকট, অবক্ষয়ের যে ছায়ায় ঢেকে যাচ্ছে সমাজ; আমলে রাখতে হবে এ বিষয়টিও। এমন পটভূমিতে চাই গণজাগরণ। তা না হলে রাজনীতি, সমাজ, শিক্ষাঙ্গনে কলুষতার যে ছায়া পড়েছে, তা কাটবে না। একটি দেশ ও সমাজের জন্য রাজনীতি অবশ্যই অপরিহার্য বলে মনে করি। রাজনীতি ভিন্ন সমাজ মজা পুকুরের মতো এবং এ রকম কোনো সমাজে মানুষের মৌলিক কিংবা গণতান্ত্রিক অধিকারের পূর্ণতা লাভ সম্ভব নয়।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেমন সে রাজনীতি? এক কথায় উত্তর দেওয়া যায়Ñ স্বচ্ছ, গঠনমূলক এবং মানুষের জন্য যা কিছু কল্যাণকর, সেই সংজ্ঞাসূত্র মোতাবেক রাজনীতি। আমাদের রাজনীতির অর্জন যেমন কম নয়, তেমনি বিসর্জনের খতিয়ানও যথেষ্ট বিস্তৃত। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন ইত্যাদি অনেক কিছুই তো রাজনীতির অর্জন। স্বাধীন বাংলাদেশেও এ রাজনীতির মধ্য দিয়ে আমাদের অর্জনের খতিয়ান কম বিস্তৃত নয়। এসবই আশার কথা। কিন্তু এর পাশাপাশি নিরাশার কথাও আছে। স্বাধীন বাংলাদেশে কারও কারও হীনস্বার্থ চরিতার্থকরণের হাতিয়ার হয়েছে রাজনীতি। অগণতান্ত্রিক শাসকরা এক্ষেত্রে দৃষ্টান্তের প্রথম কাতারে রয়েছেন। আবার তাদের মাঝেও কেউ কেউ আছেন, যারা গণতান্ত্রিক রাজনীতি চর্চার দাবিদার। এত কথা বলার সংগতকারণ রয়েছে। সম্প্রতি ফেনীর একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি যে পৈশাচিকতা-বর্বরতা-নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত জীবনযুদ্ধে হেরে গেলেন, এর বর্ণনা দেওয়া ভার। তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা এবং তার যে চক্র, তারা সবাই স্থানীয় কোনো কোনো রাজনীতিকের আশীর্বাদপুষ্ট। এ রাজনীতিকরা কোন দলের অনুসারীÑ এ প্রশ্নটা তুলছি না। যে বা যারা এমন দুষ্কর্মের হোতাদের পৃষ্ঠপোষক, তাদের রাজনৈতিক-সামাজিক পরিচয় থাকতে পারে না। তারা যে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বলে পরিচিত, তাদের দুষ্কর্মের বোঝা ওই দল বইবে কি না, এটা তাদের ব্যাপার। তবে সামাজিক বিবেচনায় বলে তাদের একমাত্র পরিচয়Ñ তারা দুর্বৃত্ত এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ফলে তারা সমাজের বিষফোড়া হিসেবে চিহ্নিত। ফেনীর ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা শিক্ষক নামের কলঙ্ক। 
এমন সিরাজ-উদ-দৌলার সংখ্যা কম নয়। বিষয়টি হলো, কারও কারও প্রকাশ ঘটে নগ্নভাবে, কারওটা ঢাকা রয়েছে মুখোশের আবরণে। শিক্ষাঙ্গনে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়টিও নতুন নয়। নিম্ন পর্যায় থেকে উচ্চপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নের বহু অভিযোগ এরই মধ্যে উঠেছে। নিপীড়ক কখনও শিক্ষক, কখনও সহপাঠী কিংবা অন্য কেউ। তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা বর্বরতার যে নজির সমাজ ও রাষ্ট্রের সামনে দাঁড় করিয়েছে, এর ক্ষত অনেক গভীর এবং চরম মর্মন্তুদও। গণমাধ্যমের কল্যাণে আমরা এ রকম অভিযোগও জেনেছি, ওই অধ্যক্ষ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের নিয়মিত অর্থকড়ি দিয়ে তার দুষ্কর্মের ছায়া দানকারী হিসেবে এতদিন প্রতিপালন করে এসেছেন (সত্যাসত্য নির্ণীত হবে তদন্তে)। হ্যাঁ, এটা তো অনস্বীকার্যই যে, এ রকম অপরাধ সংঘটনে যে বা যারা মানসিকভাবে নিজেকে তৈরি করেছে, তার বা তাদের ক্ষমতার ছায়া তো প্রয়োজনই। তা না হলে এমন দুষ্কর্ম হজম করবে কী করে? নুসরাত জাহান রাফি কীভাবে, কী কারণে এ বর্বরতা-পৈশাচিকতার শিকার হয়ে চিরতরে হারিয়ে গেছে এবং এ কারণে সমাজে যে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে, এর প্রায় সবকিছুই গণমাধ্যমের কল্যাণে এরই মধ্যে পাঠকরা অবগত। ক্রমেই রহস্য উন্মোচিত হচ্ছে এবং আরও অনেক অজানা তথ্য হয়তো আমাদের সামনে আসবে।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। এ ব্যাপারে অনেকেই এরই মধ্যে অনেক কথা বলেছেন; আমিও বলেছি। কিন্তু কাক্সিক্ষত কোনো পরিবর্তন আনতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা। নুসরাত জাহান রাফির চিরবিদায় আমাদের মনে যে গভীর দাগ কেটে দিয়েছে, তা সহজে মুছবে না; তা সম্ভবও নয়। 
এছাড়া নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কিছুদিন আগে পরপর একই রকম দুটি ঘটনা ঘটল। দুজন নারী ভোটকেন্দ্রিক রাজনীতির ছোবলাক্রান্ত হলেন। ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনোত্তরও এমন ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে রাজনীতির ছত্রছায়ায় যেসব দুর্বৃত্ত রয়েছে তারাই। শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তাহীনতার উদ্বেগজনক চিত্র সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে অগণতান্ত্রিক সরকারের শাসনামলে। কত সম্ভাবনাময় জীবনপ্রদীপ নিভে গেছে আমাদের শিক্ষাঙ্গনে বৈরিতা, হিংস্রতার ছোবলে; এর হিসাব মেলানো ভার! যদি জিজ্ঞেস করা হয়Ñ মানবসভ্যতা কেমন আছে? মানুষ আছে কেমন? মানুষের অধিকারের ভূমি কতটা সমতল? বিদ্যমান পরিবেশ-পরিস্থিতি সুস্থভাবে জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে কতটা অনুকূল? এসব প্রশ্নের উত্তরটা নিরুদ্বিগ্ন থাকার মতো পাওয়া যাবে না অনেক ক্ষেত্রেই। ভয়াবহ রকমের অবক্ষয় সমাজকে যেন গ্রাস করতে চাইছে। প্রভূত উন্নয়নের কথা তো নিশ্চয়ই বলা যায়। সময় পেলেই উন্নয়ন হবে। যেমন করেই হোক আয়-উৎপাদন ব্যবস্থার ভেতর দিয়ে মানুষের শ্রম ও সৃজনীশক্তির নানাভাবে ব্যবহার হবেই। তাতে পুরোনো পৃথিবী পুরোনো থাকবে না। আমাদের বেলাতেও তাই হয়েছে। কিন্তু আমরা আমাদের সমাজে জননিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত করতে পেরেছি? কতটা দায়বদ্ধ থেকে রাজনীতিকরা সমাজকে এগিয়ে নিতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ? প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নুসরাতের ঘাতকরা রেহাই পাবে না। স্বস্তির কথা। কিন্তু তনু হত্যার বিচার আজও হয়নি। এ রকম দৃষ্টান্ত আরও দেওয়া যাবে। আমাদের প্রত্যাশা থাকল, এমনটির পটভূমি যেন আর তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। 
লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, দায়িত্বশীল কারোরই অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি আর কথার কথা হয়ে থাকবে নাÑ আমরা এটুকু নিশ্চয়তা চাই। প্রত্যেকের নিরাপত্তা চাই। কলুষতার ছায়ামুক্ত শিক্ষাঙ্গন ও সমাজ এবং রাজনীতি চাই। একই সঙ্গে চাই দায়বদ্ধ রাজনীতিক, যারা নীতির চর্চাকেই তাদের কর্তব্যজ্ঞান বলে সবসময় মনে রাখবেন। শিক্ষাঙ্গনে, সমাজে যৌন হয়রানির ব্যাপারে আমাদের অনেকের মাঝে, বিশেষ করে দায়িত্বশীলদের মাঝে যে নিস্পৃহতা, গাফিলতি লক্ষ করা যায়, এর ফলেই সিরাজ-উদ-দৌলার মতো শিক্ষক নামের এমন কলঙ্কিতরা যৌন নিপীড়ক হিসেবে দাঁড়াচ্ছে। যখন নুসরাতের ঘটনায় সমাজের শুভবোধসম্পন্ন মানুষ শোকে হতবিহ্বল, তখন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে পুনর্বার ক্যাম্পাস উত্তাল। অতীত থেকে এমন যৌন হয়রানির দৃষ্টান্ত আরও অনেক দেওয়া যাবে। এ নিপীড়কদের সৃষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কেউ লড়ছেন রাজপথে বিচারের দাবিতে আর কেউ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে করতে হেরে যাচ্ছে। প্রশ্ন রাখিÑ কেন এখনও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষিত? কেন এবং কোন পরিপ্রেক্ষিতে সিরাজ-উদ-দৌলাদের সংখ্যাচিত্র ক্রমেই স্ফীত হচ্ছে? এ অপরাধীরা কী করে রাজনৈতিক নেতাদের ছায়াতলে থাকার অবকাশ পায়? জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত, কেন কিংবা কোন শক্তিবলে তাদের কেউ কেউ অভিযুক্তকে রক্ষা করে আক্রান্তকেই ফাঁসাতে চায়? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর সন্ধানক্রমে যথাযথ প্রতিকারের মধ্যেই প্রতিবিধান নিহিত। 
প্রচলিত অর্থে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কঠোর নিয়ম-কানুনের মর্মান্তিক জাঁতাকলে পিষ্ট করছে শিক্ষার্থীদের; বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষার্থীর মানসিক আশ্রয় বলতে কিছু নেই, না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, না পরিবারে, না সমাজে, না রাষ্ট্রে। অবিরাম সে প্রত্যাশার চাপের মাঝে পার করছে তার যাপিত দিনগুলো। ফলে সে আশ্রয় খোঁজে অনলাইনে, ফেইসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপে কিংবা ইমুতে। বেলাশেষে এ শিক্ষার্থী দেখে, তার জীবনের সবকিছু সে হারিয়ে বসে আছে। অথচ তার বাবা-মা, তার সমাজ, তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তার কাছে অনেক কিছু আশা করে এবং এ আশা এত বেশি দুর্বিষহ যে, তখন সে নিজেকে সফলদের কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য অসদুপায় অবলম্বন করে। এসব থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে খেলাধুলা, বিতর্ক, কবিতা আবৃত্তি, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশ নিতে হবে। এটা শুধু বিজয়ের জন্য নয়, পরাজয় মেনে নিতে শেখার জন্য। হ

 রায়হান আহমেদ তপাদার
লেখক ও কলামিস্ট