বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর শনিবার কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন : শিল্পের শিক্ষাগুরু’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ রচনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক শিল্পী দুলাল চন্দ্র গাইন। সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকেন বিশিষ্ট শিল্পী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক ড. ফরিদা জামান, বিশিষ্ট শিল্পসমালোচক অধ্যাপক মঈনুদ্দীন খালিদ এবং শিল্পীপুত্র মইনুল আবেদিন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি শিল্পী হাশেম খান।
স্বাগত ভাষণে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহমেদ বলেন, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরকে ১৪ জন বরেণ্য ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যুবার্ষিকী পালনের নির্দেশনা প্রদান করেছে। সেই সেমিনারমালার অংশ হিসেবে আজকের আয়োজন। আমরা মনে করি আজকের আয়োজন শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবে এবং শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সম্পর্কে জানা অজানা অনেক কিছু জানতে পারবে।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন একাধারে বাংলাদেশের শিল্প আন্দোলনের পথিকৃৎ, সফল শিল্পী-শিক্ষক, বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান ধারক-বাহক ও সেবক এবং মানবতার প্রেমিক। নিজ প্রচেষ্টায় তিনি কলকাতায় গিয়ে সরকারি আর্ট স্কুলে ভর্তি হন এবং ছাত্র অবস্থায়ই তরুণ শিল্পী হিসেবে সারা বাংলায় সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ চিত্রমালার মাধ্যমে মানবতাবাদী শিল্পী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। দেশভাগের প্রেক্ষাপটে ১৯৪৮ সালে ঢাকায় একটি শিল্পশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার নেতৃত্ব দান তার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন। তার বিখ্যাত চিত্রকর্মের মধ্যে রয়েছে দুর্ভিক্ষ-চিত্রমালা, সংগ্রাম, সাঁওতাল রমণী, ঝড়ু, কাক, বিদ্রোহী ইত্যাদি। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে গ্রামবাংলার উৎসব নিয়ে আঁকেন তার বিখ্যাত ৬৫ ফুট দীর্ঘ ছবি নবান্ন। চিত্রশিল্পবিষয়ক শিক্ষার প্রসারে আমৃত্যু প্রচেষ্টার জন্য জনসাধারণ্যে তিনি শিল্পাচার্য অভিধা লাভ করেন। অনুমান করা হয়, তার চিত্রকর্মের সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। বাংলাদেশের চিত্রকরদের মধ্যে তিনি শিল্পগুরু বিবেচিত। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি