আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১২-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

দাম কমালে পাটজাত পণ্য বিক্রি সম্ভব

গুদামে পড়ে আছে প্রায় ৭৫০ কোটি টাকার পণ্য

রাজশাহী ব্যুরো
| নগর মহানগর

দেশের রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকলগুলোতে এখন প্রায় ৭৫০ কোটি টাকার পণ্য গুদামে পড়ে আছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পাটজাত এসব পণ্য বিক্রি না হওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের বেতন হচ্ছে না। ঈদের আগে বেতন-ভাতা পরিশোধের সরকারি ঘোষণা না এলে পাটকল শ্রমিকরা আবারও আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কিছুটা কমিয়ে পাটজাত পণ্য বিক্রি করার পক্ষে মত দিয়েছেন রাজশাহী-২ আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। আওয়ামী লীগের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বাদশা বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন পাটজাত পণ্যের দাম দুই থেকে তিন ডলার কমিয়ে দিলেই সব পণ্য বিক্রি হয়ে যাবে। তখন পর্যাপ্ত টাকার জোগান হবে এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হবে। শনিবার রাজশাহী জুটমিলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের সঙ্গে সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। 
বাদশা বলেন, পাটশিল্পের প্রতি অবহেলার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পৃথিবীতে পাটজাত পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু আমরা পেছাচ্ছি। এর পেছনে কারা দায়ী? এখন প্রতি টনে দুই-তিন ডলার দাম কমিয়ে দিলেই সব পণ্য বিক্রি হয়ে যাবে। তাহলে কোনো শ্রমিক বেতন থেকে বঞ্চিত হবে না। অচলাবস্থা দূর হবে। শ্রমিকদের পেটে ভাত জুটবে। এ বিষয়ে তিনি আজ রোববার বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়ে বলেন, প্রতিদিন লাখ লাখ ডলার বিদেশে পাচার হচ্ছে। কিন্তু পাটজাত পণ্যের দাম দুই-তিন ডলার কমানো হচ্ছে না। শ্রমিকরা অনাহারে থাকছে। এটা হতে দেওয়া যায় না। এ বিষয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করব। সরকারি পাটকলগুলোর এ দূরাবস্থা কাটানো দরকার।
এর আগে মতবিনিময়কালে রাজশাহী জুটমিল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জিল্লুর রহমান এমপিকে জানান, রাজশাহী জুটমিলের কর্মচারীরা চার মাস বেতন পাননি। আর শ্রমিকরা মজুরি পাননি ১২ সপ্তাহের। কর্মকর্তাদেরও বেতন বাকি পাঁচ মাসের। বেতন না হওয়ায় সবাই বেকায়দায় পড়েছেন। বিশেষ করে সামান্য মজুরির শ্রমিকরা জীবনের এক চরম দুঃসময় পার করছেন। তাদের জীবনে ঈদ এগিয়ে আসছে অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে। তাই  সোমবারের মধ্যে তারা বেতন-ভাতা পরিশোধের সরকারি ঘোষণা চাইছেন। তা না হলে ওই দিন থেকেই তারা টানা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বাদশা শ্রমিকদের বলেন, সরকার সোমবারের মধ্যেই বিষয়টার সমাধান করবে বলে তিনি আশা করছেন। এ নিয়ে তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে যাবেন। ঈদের অন্তত ১৫ দিন আগেই যেন শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়, তিনি সেই দাবি জানাবেন। কিন্তু শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করা না হলে তাদের আন্দোলন হবে যৌক্তিক। এ আন্দোলনে তারও সমর্থন থাকবে। শ্রমিকরা যদি এ আন্দোলন ডাকেন, তবে তিনি নিজেও এসে শ্রমিকদের সঙ্গে রাস্তায় বসবেন।
রাজশাহী জুটমিলের সভাকক্ষে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন জুটমিলের প্রকল্প প্রধান আমিনুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামানিক দেবু, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অসিত পালসহ জুটমিলের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা।