আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১২-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

অর্থবছরের ৯ মাস

আমদানিতে ঋণপত্র খোলা কমেছে ২০.৮৯ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
| অর্থ-বাণিজ্য

সামগ্রিক পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার কমেছে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৪ হাজার ৪২৬ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫ হাজার ৫৯৫ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। সে হিসাবে আট মাসে পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলার হার ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমেছে। তবে আলোচ্য সময়ে এলসি খোলার হার কমলেও নিষ্পত্তি সামান্য বেড়েছে। একই সময়ে ৪ হাজার ১২১ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের ঋণপত্র নিষ্পত্তি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ৮৪০ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। অর্থাৎ একই সময়ের তুলনায় নিষ্পত্তি বেড়েছে ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। 
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই-মার্চ সময়ে খাদ্যপণ্যের মধ্যে চাল ও গম আমদানিতে ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তি উভয়ই কমেছে। আলোচ্য সময়ে ১১৩ কোটি ৬১ লাখ ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩২২ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। সে হিসাবে খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলা কমেছে ৬৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অন্যদিকে এ সময়ে খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র নিষ্পত্তি কমে গেছে ৫৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এ পণ্যগুলোর এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ১০৬ কোটি ৬০ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৪৭ কোটি ২১ লাখ ডলার।
আলোচ্য সময়ে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৩৭৫ কোটি ৩৪ লাখ ডলার, যা গেল অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫১৮ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। সে হিসাবে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ঋণপত্র খোলা কমেছে ২৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এ সময়ে মূলধনি যন্ত্রপাতির এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৩৬১ কোটি ২৬ লাখ ডলার, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৯৮ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। এ হিসাবে মূলধনি যন্ত্রপাতির নিষ্পত্তি কমেছে ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। 
প্রতিবেদনে দেখা যায়, অর্থবছরের আট মাসে পেট্রোলিয়াম তথা জ্বালানি তেল আমদানিতে ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তি দুটোই বেড়েছে। এ সময়ে এলসি খোলা হয় ২৮০ কোটি ৮৬ লাখ ডলার, যা গেল অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৬৫ কোটি ৩২ লাখ ডলার। এতে জ্বালানি তেল আমদানিতে ঋণপত্র খোলা বেড়েছে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ সময়ে পণ্যটির এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ২৮০ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২২৩ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। নিষ্পত্তি বেড়েছে ২৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ। 
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে শিল্পের কাঁচামালের আমদানি ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তি বেড়েছে যথাক্রমে দশমিক ৭৬ শতাংশ ও ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এ সময়ে শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ১ হাজার ৪৯৫ কোটি ১ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৪৮৩ কোটি ৭২ লাখ মার্কিন ডলার। আর এ সময়ে শিল্পের কাঁচামালের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ১ হাজার ৪৭৩ কোটি ২১ লাখ ডলার, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৩৪২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। 
এছাড়া আলোচ্য সময়ে অন্যান্য পণ্য আমদানির এলসি খোলা কমেছে ২৮ দশমিক ০৭ শতাংশ। কিন্তু একই সময়ে নিষ্পত্তি বেড়েছে ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে দেশে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যপণ্য উৎপাদিত হয়েছে। কয়েক বছরে চাল তেমন আমদানি করার প্রয়োজন হয়নি। আর ফসলে খারাপ প্রভাব ফেলে সে রকম কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বর্তমানে হয়নি। এ কারণে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলার হার অনেক কমে গেছে।