টাকার বিপরীতে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে গেল অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও রেমিট্যান্সে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুন ২০১৮-এপ্রিল ২০১৯) রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৩৩০ কোটি ২০ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২০৯ কোটি ২৩ লাখ মার্কিন ডলার। সে হিাসবে একই সময়ে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১২০ কোটি ৯৭ লাখ ডলার বা ১০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্সের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বড় অবদান রাখছেন প্রবাসীরা। বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বিশেষ করে হুন্ডি প্রতিরোধে কড়াকড়ি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে নেওয়া নানা উদ্যেগের সুফল পাওয়া যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, একক মাস হিসেবে সর্বশেষ এপ্রিলে ১৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ২০১৮ সালে এপ্রিলে পাঠিয়েছিলেন ১৩৩ কোটি ১৩ লাখ ডলার। এ হিসাবে এপ্রিল মাসে গেল বছরের এপ্রিলের চেয়ে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠায় ১৩১ কোটি ৭০ লাখ ডলার, আগস্টে ১৪১ কোটি ১০ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ১১২ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১১৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১১৮ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ১২৩ কোটি ডলার। আর ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ ১৫৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৪ সালের জুলাই মাসে ১৪৯ কোটি ২৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে। গেল জানুয়ারির আগে ওটাই ছিল এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। গেল জানুয়ারির পর ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসে ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, মার্চে ১৪৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার, সর্বশেষ গেল এপ্রিলে রেমিট্যান্স আসে ১৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর শীর্ষ ১০টি দেশ হলো যথাক্রমে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, কুয়েত, ওমান, যুক্তরাজ্য, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন।
উল্লেখ্য, অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক রেমিটেন্সে সুখবর দিয়ে শেষ হয়েছিল ২০১৮ সাল। গেল বছরে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগে ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার। ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার এবং ২০১৫ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ৫৩১ কোটি ডলার।
