আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১২-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

‘আগামী অর্থবছর থেকেই ভ্যাট আইন কার্যকর’

নিজস্ব প্রতিবেদক
| অর্থ-বাণিজ্য

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

 

ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের ইচ্ছা থাকলেও তা করতে দেওয়া হয়নি। তবে, আগামী বাজেটে আইনটি পুরোপুরি কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে একক হার নয়, থাকবে একাধিক হার বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বলেন, আগে একক ভ্যাট হার থাকায় ব্যবসায়ীদের আপত্তি ছিল। আইন পরিবর্তন করা যায়নি, বাজেটও ছিল না। এখন ব্যবসায়ীরা যেভাবে চাচ্ছেন সেভাবেই হবে। 
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট সামনে রেখে রাজস্ব পরিকল্পনা সাজাতেই শনিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনে যান অর্থমন্ত্রী। এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা। বৈঠক শুরু হওয়ার আগেই অর্থমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, ব্যবসায়ীদের অভিযোগÑ ভ্যাট আইন কার্যকরের ক্ষেত্রে এখনও প্রস্তুত নয় সরকার। উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, কার্যকরের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদেরই আপত্তি ছিল। তাদের কারণেই আইনটি কার্যকর হয়নি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কর আহরণের ক্ষেত্রে আগামীতে নতুন ধারণা নিয়ে যাত্রা শুরু করবে এনবিআর। কর জিডিপি অনুযায়ী রাজস্ব আদায় কম হলেও দেশের প্রবৃদ্ধি কমবে না বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, প্রবৃদ্ধির বড় এলাকা হচ্ছে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত। এটি সরকারের তৈরি করা না। এনবিআরকে ঘিরে নানামুখী সংস্কার উদ্যোগের কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী জানান, আগে যেসব জায়গা আমরা হাত দিইনি, এখন সেখানে হাত দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, বাড়ানো হবে এনবিআরের জনবল।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আাইএমএফ) একটি প্রক্ষেপণ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে নানা সংকট থাকলেও ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী ২০ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। এ তালিকায় অন্যদেশগুলো হচ্ছে স্পেন, কানাডা, থাইল্যান্ড। এসব দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ওই দেশগুলোয় ১ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়, আর বাংলাদেশে হয় পয়েন্ট ৯ শতাংশ হারে।
গেল বৃহস্পতিবার ইকোনমিক আউটলুক প্রকাশ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম। সেখানে প্রবৃদ্ধি হার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবি যেখানে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে ভালো খবর দিচ্ছে, সেখানে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের এমন সংশয় ঠিক নয়। তিনি বলেন, আমাদের কর জিডিপির হার কম। ১৮ থেকে ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন, সেখানে এখন হচ্ছে ১০ থেকে ১২ শতাংশ। তারপরও এতে প্রবৃদ্ধি কমবে না। গেল ১০ বছরে রাজস্ব আদায়ের যে গতি, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার কোটি টাকা। আর এবারের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। রাজস্বের এ লক্ষ্য পূরণ না হলেও কাছাকাছি পর্যায়ে যাবে। 
বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, চলতি অর্থবছর শেষে রাজস্ব আহরণের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে। বলেন, মূলত এপ্রিল-মে মাসেই বেশি রাজস্ব আহরণ হয়। সেই তথ্য পাওয়া যায় পরে।