আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১২-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

হাজীগঞ্জে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবতী অন্তঃসত্ত্বার ঘটনায় মামলা

ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ৩

চাঁদপুর প্রতিনিধি
| শেষ পাতা

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবতীকে অন্তঃসত্ত্বা করার দায়ে ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। শুক্রবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ওসি মো. আলমগীর হোসেন রনি ও তদন্ত কর্মকর্তা, থানা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুর রশিদসহ সঙ্গীয় ফোর্স। তারা হলেন হাজীগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম, একই ওয়ার্ডের ডাটরা-শিবপুর গ্রামের গাজীবাড়ির ওরফে চকিদারবাড়ির রফিকুল ইসলামের ছেলে এমরান হোসেন এবং একই বাড়ির সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরেফিন ওরফে আমিনুল। 

ঘটনাটি ঘটে, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ১০নং দক্ষিণ গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড ডাটরা শিবপুর গ্রামের গাজীবাড়ি ও ওরফে চকিদার বাড়িতে। এ ঘটনায় মামলার অন্য আসামি ওই বাড়ির ইসমাইলের ছেলে রাব্বি, বিল্লাল হোসেনের ছেলে মেরাজ ও মৃত ছেরাজল হকের ছেলে সালিশদার মোস্তফা কামাল বিকম পলাতক রয়েছেন। এর আগে অন্তঃসত্ত্বা যুবতী বাদী হয়ে শুক্রবার হাজীগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। জানা গেছে, চার যুবকের ধর্ষণে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবতী। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম ও সালিশদার মোস্তফা কামাল বিকম ঘটনা ধামাচাপা দিতে চার ধর্ষকের মধ্যে যুবতীর পছন্দ অনুযায়ী এক ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করেন। এর আগে চার ধর্ষকের কাছ থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আদায় করে যুবতীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখেন ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম ও সালিশদার মোস্তফা কামাল বিকম। শনিবার যুবতীর পছন্দের পাত্র ধর্ষক রাব্বির সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। ঘটনাটি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর যুবতীর পাশে এগিয়ে আসে পুলিশ। শুক্রবার রাতে যুবতী বাদী হয়ে চার ধর্ষক ও ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম, সালিশদার মোস্তফা কামাল বিকমসহ ৬ জনকে আসামি করে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এ দিন রাতেই ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম এবং ধর্ষক এমরান হোসেন ও আরফিন আমিনুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। থানা হেফাজতে থাকা অহিদুল ইসলাম জানান, ধর্ষিতাকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলেছিলাম; কিন্তু সে এবং তার পরিবারের লোকজন রাজি হয়নি। তাই এলাকার সালিশদারদের সঙ্গে নিয়ে উভয় পক্ষের (ধর্ষিতা, ধর্ষক এবং তাদের পরিবার) সঙ্গে বসে এবং মেয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাব্বির সঙ্গে বিয়ে ঠিক করি। তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের কাছ থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আদায় করি এবং ধর্ষিতা যুবতীর নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রাখি। ওসি মো. আলমগীর হোসেন রনি জানান, মামলার ছয় আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারকৃতদের শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অপরাধে ইউপি সদস্য ও সালিশদার মোস্তফা কামাল বিকমকে আসামি করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।