দক্ষিণ আফ্রিকায় দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন বাংলাদেশি যুবক জয়নাল আবেদীন। দক্ষিণ আফ্রিকার নিউক্যাসেল শহরে স্থানীয় সময় বুধবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার বিকালে জয়নালের পরিবারের পক্ষ থেকে খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে। আসন্ন ঈদে দেশে ফিরে বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটানো স্বপ্ন ছিল জয়নালের। তার সে স্বপ্ন চির অধরাই থেকে গেল!
নিহত জয়নাল টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার টেরকী গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে। তার মামা দুদু মল্লিক জানান, এইচএসসি পাস করে ১০ বছর আগে জয়নাল আবেদীন দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান। সেখানে নিউক্যাসেল শহরে একটি মুদি দোকান চালাতেন তিনি। দোকানের পাশেই একটি কন্টেইনারে থাকতেন জয়নাল। বুধবার রাতে কাজ শেষে প্রতিদিনের মতো জয়নাল সেখানে ঘুমিয়ে পড়েন। স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে কারও ডাকাডাকিতে জয়নাল জানালা খুলে বাইরে উঁকি দেন। সঙ্গে সঙ্গে দুর্বৃত্তরা তার কপালের বাম পাশে গুলি করলে গুলিটি মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সেখানকার প্রতিবেশী এক বাঙালি যুবক বৃহস্পতিবার সকালে জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে খবর দেন। মুহূর্তেই খবরটি ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
দুদু মল্লিক জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, সেখানে জয়নালের পরিচিত লোকজনই টাকার লোভে এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে। কারণ, বুধবার বিকালে জয়নাল আবেদীন বাড়িতে ফোন করে জানান যে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে তিনি কানাডায় চলে যাবেন। এজন্য তিনি নগদ ২০ লাখ টাকা হাতে রেখে দিয়েছেন। সেখানে জয়নাল একটি গাড়িও কিনেছেন। কানাডা যাওয়ার আগে তিনি দোকান ও গাড়ি বিক্রি করে সব টাকা বাড়িতে পাঠিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকা হবে। আগামী ঈদে বাড়িতে আসার কথাও জানান তিনি। কিন্তু ওই দিন রাতেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। চার ভাই এক বোনের মধ্যে জয়নাল আবেদীন ছিল দ্বিতীয়। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৫ সালে একইভাবে খুন হন জয়নাল আবেদীনের ছোট ভাই আমিন। ঢাকার কেরানীগঞ্জে নিখোঁজ হওয়ার কয়দিন পর বুড়িগঙ্গায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। মর্মান্তিকভাবে দুটি ছেলেকে হারিয়ে তাদের পিতা-মাতা এখন পাগলপ্রায়। পরিবারের পক্ষ থেকে জয়নাল আবেদীনের লাশ দ্রুত দেশে আনার দাবি জানানো হয়েছে।