আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১৫-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

এএফসি কাপ ২০১৯

আবাহনীর অঘোষিত ‘ফাইনাল’

স্পোর্টস রিপোর্টার
| খেলা

গণমাধ্যম পর্বে বেশ গলাগলি ভাব দেখালেন আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস, স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবনের সঙ্গে চেন্নাইন কোচ জন গ্রেগরি ও ফার্নান্দো ফ্রান্সিসের। কিন্তু আড়ালে ছিল দৃঢ়তা, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যায় (৭টায়) তারা শত্রু! দুই দলের জন্যই ম্যাচটা অঘোষিত ফাইনাল, চেন্নাইন জিতলে এএফসি কাপের চূড়ান্ত পর্বে চলে যাবে, জেনেই গতকাল গণমাধ্যম পর্বে ‘আবাহনী শক্ত দল’ বলে চেন্নাইনের ব্রিটিশ কোচ গ্রেগরির চোখে জয়ের নেশা, ‘ম্যাচ জিতলে মূল পর্বের পথে আমরা অনেক এগিয়ে যাব, তাই জয়ের জন্য সেরাটা খেলব।’ মূল পর্বের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে জয়ের বিকল্প পথ নেই স্বাগতিক আবাহনীর, কোচ লেমোস জানান, ‘ম্যাচ জিততে না পারলে আর কোনো সম্ভাবনা থাকবে না, ঘরের মাঠের ম্যাচ জেতার জন্যই খেলব।’ ফরোয়ার্ড জীবনও বলেই দিলেন, ‘এটা আমাদের জন্য ফাইনাল ম্যাচ। জিতলে আরও খেলার অনুপ্রেরণা পাব, হারলে শেষ।’

তবে জীবনদের চিন্তাভাবনায় চার দিন পর বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটাও ঘুরছে। আজ জিতলে ১৯ মে কিংসের বিপক্ষে উজ্জীবিত খেলার অনুপ্রেরণা পাবেন, হারলে প্রভাব যে সে ম্যাচেও পড়বেÑ মানছেন জীবন। তাই তো মরিয়া হয়ে খেলতে চাচ্ছেন আকাশি-হলুদরা। লেমোস-জীবন ভালো খেলার যত চেষ্টার কথাই বলুক সমস্যা রক্ষণে। চোটে মৌসুম শেষ ডিফেন্ডার তপু বর্মণ ও মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদের। চোট কাটিয়ে দুই দিন ধরে অনুশীলন করলেও বাদশাকে নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। হালকা চোট আছে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ওয়েলিংটন প্রিয়রি ও ওয়ালী ফয়সালের। এরপরও চেন্নাইনের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে আবাহনী কোচ জানালেন নিখুঁত খেলার লক্ষ্য তাদের! ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপে শীর্ষে ২০১৭-১৮ আইএসএল চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইন, সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আবাহনী। জিততে পারলে চেন্নাইন ও আবাহনীর পয়েন্ট সমান হবে; জয়ের ব্যবধান ২ গোলের হলে গোল গড়ে ভারতীয় দলটিকে (৩/০) টপকে শীর্ষে উঠবে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা (৩/৩)।
আবাহনী চাপে পড়েছে ১৭ এপ্রিল আহমেদাবাদে, দুর্দান্ত খেলেও আত্মঘাতী গোলে চেন্নাইনের কাছে হেরে। এবার নিজেদের মাঠে খেলা, প্রস্তুতির জন্য সময় পাওয়ায় চোটাক্রান্ত দল নিয়েও আশাবাদী লেমোস, ‘তপু ও ফাহাদকে মিস করব না বললে সেটা মিথ্যা বলা হবে। ওরা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফুটবলে চোট হবে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে চোট তাদের মৌসুম শেষ করে দিয়েছে। তারপরও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ম্যাচের জন্য কে কে প্রস্তুত আছে, এখনও জানি না। তপু-ফাহাদ খেলতে পারবেই না। আরও দুই-তিনজনের চোট আছে, ওয়েলিংটন হয়তো খেলতে পারবে। বাদশার ব্যাপারটা আসলে নিশ্চিত নই। ও মাত্রই অনুশীলন শুরু করেছে। কিন্তু ম্যাচটাকে ফাইনাল হিসেবে নিচ্ছি। শেষ তিনটি ম্যাচে আমাদের ডিফেন্ডাররা ভালো খেলেছে। বিশেষ করে চেন্নাইনের বিপক্ষে ম্যাচে তারা খুব বেশি সুযোগ দেয়নি। ট্রানজিশন পিরিয়ডে আমরা কিছুটা পিছিয়ে থাকি, এ সময় আমাদের আরও বেশি নিখুঁত হতে হবে।’ চেন্নাইনের বিপক্ষে প্রথম লেগে ঝক্কি-ঝামেলা কাটিয়ে শেষ মুহূর্তে দলে যোগ দিয়েছিলেন লিগে ১০ গোল করা সানডে চিজোবা। তবে তিনি ভাগ্য গড়ে দিতে পারেননি, আরেক ফরোয়ার্ড জীবনও হতাশ করেন। নিজেদের মাঠে ফরোয়ার্ডদের আরও নিখুঁত হওয়ার আহ্বান কোচের, ‘জিততে হলে আক্রমণে আরও নিখুঁত হতে হবে আমাদের। চেন্নাইন গত ম্যাচে তেমন সুযোগ পায়নি, একটা হাফ চান্স পেয়ে সেটাই কাজে লাগিয়েছে, এ ধরনের দলের বিপক্ষে খেলতে গেলে পারফেক্ট হতে হবে।’
সুযোগ নষ্ট যেন না হয়, সেজন্য অনুশীলনে জোর দিয়েছেন কোচÑ জানান জীবন। চান না, আহমেদাবাদের মতো ঢাকায় ভুলগুলো হোক। গ্রুপে পর্বের গত ৩টি ম্যাচই চেন্নাইন খেলেছে নিজেদের মাঠে, যদিও সেটা আহমেদাবাদে, আবাহনী ম্যাচ দিয়ে অ্যাওয়ে মাঠে যাত্রা শুরু করা দলটির কোচ গ্রেগরি সমীহ করতে ভোলেননি প্রতিপক্ষকে, ‘নিজেদের মাঠে গত ৩ ম্যাচই অপরাজিত, সামনে আমাদের কঠিন ম্যাচ, আবাহনী অনেক ভালো দল, আমাদের মাঠেও তারা দুই সপ্তাহ আগে ভালো খেলেছে। আমার মনে হয় সম্ভবত গ্রুপের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচটি খেলতে যাচ্ছি আমরা। গত ম্যাচে আমরা জিতলেও ভাগ্যের সহায়তাও পেয়েছিলাম। তবে এখান থেকেও পয়েন্ট নিয়ে যেতে চাই।’ আবাহনীও যে চায় পুরো পয়েন্টÑ ফাইনালের আবহই তো দুই কোচের কথায়।