আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১৫-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

নকশা না থাকা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা

বরিশালে শিশু হাসপাতাল নির্মাণকাজ থমকে আছে

বরিশাল ব্যুরো
| নগর মহানগর

শিশুদের জন্য উন্নত চিকিৎসাসেবা নেই বরিশালে। শেবাচিম হাসপাতালে নামমাত্র সেবার ব্যবস্থা থাকলেও সেখানে প্রতিদিন শত শত শিশুর ঠাঁই হয় মেঝেতে। এ অবস্থায় শিশুদের যে কোনো সংবেদনশীল চিকিৎসার লক্ষ্যে বরিশাল নগরীতে পাঁচ বছর আগে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কিন্তু ভিত্তিপ্রস্তর ছাড়া কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি হাসপাতালের নির্মাণ কাজের। অভিযোগ উঠেছে, বিলম্বে হাসপাতালের নকশা তৈরি এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় এর নির্মাণ কাজ মুখথুবড়ে পড়ে আছে।

বরিশাল নগরীর আমানতগঞ্জে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এ হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের ১৮ আগস্টে এবং শেষ হওয়ার কথা ২০১৯ সালে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেবল পাইলিং কাজ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বরিশাল সফরে এসে বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল নির্মাণ কাজ থমকে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের ওপর অসন্তোষ প্রকাশও করেন তিনি। স্থানীয় সূত্র জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘কেএসবিএল-এসআরআর’ রহস্যজনক কারণে কাজে ধীরগতি করছে। তবে হাসপাতাল নির্মাণ কাজের যৌথ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কেএসবিএল-এসআরআরের পক্ষে সাইদুর রহমান রিন্টু সাংবাদিকদের জানান, ২০১৭ সালের ১২ জানুয়ারি এ হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কার্যাদেশ পাওয়ার পর পরই পাইলিং কাজ শেষ হলেও আজ পর্যন্ত গণপূর্ত বিভাগ পূর্ণাঙ্গ ফাউন্ডেশন ডিজাইন দিতে পারেনি। তিনি বলেন, ফাউন্ডেশন ডিজাইনের অভাবে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। ডিজাইন না পাওয়ায় নির্ধারিত সময়ে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ কোনোভাবেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। 
জানা গেছে, বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়  (শেবাচিম) হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যা আছে মাত্র ৩৫টি। আধুনিক সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ড নেই। ফলে এখানে শিশুদের উন্নত এবং আধুনিক চিকিৎসার জন্য আমানতগঞ্জে ২০০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। শেবাচিম হাসপাতালের শিশু বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ডা. সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে মাত্র ৩৫টি শয্যা থাকায় শিশুদের নানা জটিল সমস্যার উপযুক্ত সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। সংবেদশীল অনেক শিশু রোগীকে চিকিৎসা নিতে হয় মেঝেতে শয্যা বিছিয়ে। তাই বিশেষায়িত শিশু হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে সেবা কার্যক্রম শুরু করা প্রয়োজন। 
এ প্রসঙ্গে বরিশাল নাগরিক সমাজের সদস্য ডা. মিজানুর রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের শিশুদের জন্য কোনো বিশেষায়িত হাসপাতাল নেই। আমানতগঞ্জের হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে এ অঞ্চলের শিশুদের জন্য উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হবে। এ ব্যাপারে বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জে. অলিভার গুদা বলেন, গণপূর্ত বিভাগের ঢাকার ডিজাইন বিভাগ থেকে চূড়ান্ত নকশা এখনও পাওয়া যায়নি। খুব শিগগিরই নকশা পাওয়া যাবে।