খুলনায় রমজানের বাজারে চালসহ আটটি পণ্যের দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে চাল, সয়াবিন তেল, গোল আলু, দেশি-বিদেশি রসুন, মুরগি, গরুর মাংস, দেশি মুরগির ডিম ও চিনি। এদিকে কমেছে চারটি পণ্যের দাম। এগুলো হচ্ছে পেঁয়াজ, খাসির মাংস, প্যাকেটজাত লবণ ও আদা। জানা যায়, ১৬ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, সরবরাহ ও মজুদসংক্রান্ত সভায় রমজানে বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করার ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়। দাম বৃদ্ধির কারসাজি রোধকল্পে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত সুপারিশের আলোকে মূল্য পরিস্থিতি যথাযথ তদারকির জন্য বাজার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে রমজানে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। বাজার কর্মকর্তার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬ এপ্রিলের বাজারদরের সঙ্গে ১২ মে’র বাজারদরের তারতম্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। মোটা চাল কেজি প্রতি ২৮ থেকে ৩০ টাকার পরিবর্তে ৩০ থেকে ৩২ টাকা, মাঝারি চাল ৩৮ থেকে ৪০ টাকার পরিবর্তে ৪০ থেকে ৪২ টাকা, চিকন চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকার পরিবর্তে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, সয়াবিন তেল ৮১ থেকে ৮২ টাকার পরিবর্তে ৮২ থেকে ৮৪ টাকা, গোল আলু ১৬ থেকে ১৮ টাকার পরিবর্তে ১৮ থেকে ২০ টাকা, রসুন দেশি ৫০ থেকে ৭০ টাকার পরিবর্তে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আমদানিকৃত রসুন ৯০ থেকে ১০০ টাকার পরিবর্তে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, মুরগির ডিম ৩০ থেকে ৩২ টাকার পরিবর্তে ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, গরুর মাংস ৪৪০ টাকার পরিবর্তে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, বয়লার মুরগি ১২৫ টাকার পরিবর্তে ১৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকার পরিবর্তে ৪৬০ থেকে ৪৮০ টাকা, চিনি ৫৪ টাকার পরিবর্তে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মূল্য কমের তালিকায় উল্লেখযোগ্য খাশির মাংস। ৭২০ থেকে ৭৪০ টাকার পরিবর্তে ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকার পরিবর্তে ২৫ থেকে ২৮ টাকা, বিদেশি পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকার পরিবর্তে ২০ থেকে ৪০ টাকা, লবণ ৩৬ থেকে ৪০ টাকার পরিবর্তে ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা, আদা ১২০ টাকার পরিবর্তে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলা বাজার কর্মকর্তা আবদুস সালাম তরফদার জানান, নিউমার্কেট, সান্ধ্যা বাজার ও নতুন বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে চালের দাম কেজিপ্রতি ১ থেকে ২ টাকা বাড়লে অস্বাভাবিক বলা যাবে না। স্থানীয় বাজারগুলোয় বয়লার মুরগি ১৫০ টাকার পরিবর্তে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। তার দেওয়া তথ্য মতে দেশি মুরগির দাম বেড়েছে। গরুর মাংসের দাম স্থিতিশীল। কেসিসি ও জেলা প্রশাসনের মনিটরিংয়ের কারণে বাজার দর স্থিতিশীল রয়েছে। তার দাবি, খোলা বাজারে প্রতি কেজি ছোলা ৮০ থেকে ৮৫ টাকার পরিবর্তে ৭০ থেকে ৭২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় বাজারের খুদে ব্যবসায়ী রুস্তুম আলী জানান, সোমবার প্রকারভেদে প্রতি কেজি ছোলা ৭২ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সানার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ঘুগরাকাটি, বেদকাশী, হোগলা ও মদিনাবাদ বাজারে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া বাজারে পণ্য সরবরাহে ঘাটতি নেই।
দীঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজ আল আসাদ এ প্রতিবেদককে জানান, উপজেলার সেনহাটী, পথের বাজার ও গাজীরহাটে সব পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। চিনির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। গরুর মাংস ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে।