আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১৫-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

মশার বংশবিস্তার রোধে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার

নিজস্ব প্রতিবেদক
| খবর

দেশে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগ নির্মূল কর্মসূচিতে মশা নিধনের জন্য বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে মশার বংশবিস্তার রোধ করা হবে। প্রকল্পটির নাম ‘ওলব্যাকিয়া প্রজেক্ট’। বর্তমানে বিশ্বের ১৭টি দেশে এ প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলছে, যার মধ্যে এগিয়ে আছে চীন। 

মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরের ২ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া নির্মূল কর্মসূচির অবহিতকরণ সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশেও এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা গবেষণা চলছে। গবেষণায় সফলতার ওপর নির্ভর করে দুই বা তিন বছরের মধ্যে এ প্রকল্প চালু হতে পারে। সফলভাবে চালু হওয়ার ৫ বছরের মধ্যে দেশ থেকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগ একেবারে নির্মূল করা সম্ভব হবে। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় ম্যালেরিয়া ও এডিসবাহিত রোগ নির্মূল কর্মসূচি ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) যৌথ উদ্যোগে সমাজের বিভিন্ন স্তরের স্টেকহোল্ডারদের উপস্থিতিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন, ওলব্যাকিয়া প্রজেক্টে ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে পুরুষ মশার প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া হবে। এতে মশার বংশবিস্তার একেবারে রোধ করা সম্ভব হবে। এর আগ পর্যন্ত মশার বংশবিস্তারে জনসচেতনতার মাধ্যমে রোগগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে। 

স্বাস্থ্য অধিপ্ততরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশে সর্বপ্রথম ২০০০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ৫ হাজার ৫৫১ জন আক্রান্ত হন এবং ৯৩ জন মৃত্যুবরণ করেন এ রোগে। এরপর ধীরে ধীরে এর প্রকোপ কমিয়ে আনা সম্ভব হলেও ২০১৮ সালে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ১৪৮ জন ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হন। মারা যান ২৬ জন। ওই বছর প্রায় ১ লাখের বেশি এ ধরনের রোগী ছিলেন, যারা হিসাবের আওতায় আসেনি। এর মধ্যে ঢাকা শহরেই এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। চলতি বছরে ১৩ মে পর্যন্ত ১২৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। তবে জুন মাস থেকে সাধারণত এর প্রকোপ বাড়া শুরু হয়। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্ততরের কার্যক্রম ও মশা চিহ্নিত করে নিধন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। 
সভায় ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাধারণত যেসব মশা রাতে আমাদের খুব বিরক্ত করে, সেগুলো খুব বেশি ক্ষতিকর নয়। দিনে যেসব মশা কামড়ায়, যা কামড়ানোর সময় সেভাবে বোঝা যায় না, সেগুলো এডিস মশা বা ক্ষতিকর মশা। আর এসব মশা ফুলের টব, বাথরুমের হাইকমোডসহ ঘরের বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা পানিতে জন্মায়। তাই এদের জন্য ঘরেই বেশি সাবধান হতে হবে। মশার ওষুধ ছিটানোসহ ড্রেন ও খালে গাপ্পি মাছ ছাড়ার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। 
ডিএনসিসির অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম সফিউল আজমের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মমিনুর রহমান মামুন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রাশিদুজ্জামান খান, ডিএনসিসির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক, অঞ্চল-২ এর সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা আলী, কমিউনিটি মবিলাইজার মো. হাবিবুর রহমানসহ ওয়ার্ড কাউন্সিল ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের স্টেকহোল্ডাররা। এ সময় বক্তারা ম্যালেরিয়াসহ ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের ক্ষেত্রে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ও পরামর্শ পেতে ০১৭৮৭৬৯১৩৭০ নম্বরে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান।