গ্রেপ্তারের দেড় ঘণ্টা পর মুক্তি পেলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সরোয়ার হোসেন চৌধুরী। সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছনার অভিযোগে মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর বন্দরবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুর দেড়টার দিকে আদালত থেকে পাওয়া জামিনে তিনি মুক্তি পান। ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক ইন্টার্ন নারী চিকিৎসককে লাঞ্ছিত এবং ধর্ষণ ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদে কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা চতুর্থ দিনের মতো মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের সব হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করেন। দুপুরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালত থেকে নেওয়া জামিনের কাগজপত্র থানায় দেখালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। একটি সূত্র জানায়, সারোয়ার আদালত থেকে জামিন নিয়ে ফেরার পথে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে কোর্ট থেকে জামিনের কাগজপত্র থানায় নিয়ে গেলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।
এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে সরোয়ারকে প্রধান আসামি করে এবং অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফেরদৌস হাসান।
সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরোয়ারকে গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দেয়। এদিকে ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক ইন্টার্ন নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি ও লাঞ্ছনার প্রতিবাদে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। চতুর্থ দিনের মতো মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের সব হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। দুপুরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
তাদের অন্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ বিকাল ৪ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখা এবং বিএমএ সভাপতি ও সম্পাদক, সিভিল সার্জন, ডেপুটি ডিরেক্টর (স্বাস্থ্য), মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপিও প্রদান।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে অকথ্য ভাষায় গালাগালের পাশাপাশি অস্ত্র উঁচিয়ে হত্যা এবং ধর্ষণের হুমকি দেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমানের অনুসারী দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সারোয়ার হোসেন। এ ঘটনার ভিডিও এরই মধ্যে ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শনিবার কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।