ময়মনসিংহের ভালুকায় কেজিদরে তরমুজ বিক্রি করায় ক্রেতাশূন্য দোকান- আলোকিত বাংলাদেশ
গত বছরে যে তরমুজ একশ’ টাকায় বিক্রি হয়েছিল সেই তরমুজ এবার বিক্রি হচ্ছে তিনশ’ টাকায়। রমজান মাসকে পুঁজি করে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বাজারে হঠাৎ করে কেজি দরে বিক্রি করছে তরমুজ। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে এখন এই মৌসুমি ফল। রোজা শুরুর আগেও বালিয়াকান্দিতে তরমুজ বিক্রি হতো পিস হিসেবে। আর এখন সেই তরমুজ বিক্রি হচ্ছে কেজি হিসেবে। বিক্রেতারা প্রতি কেজি তরমুজের দাম হাঁকাচ্ছে ৬০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত। আর কেজি হিসেবে বিক্রি করার কারণে একশ’ টাকার তরমুজ এখন ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে তিনশ’ টাকা দিয়ে।
হঠাৎ করে কেজি হিসেবে তরমুজ বিক্রি শুরু হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। তবে আশার কথা হচ্ছে, বালিয়াকান্দি উপজেলায় মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তরমুজের দাম নিয়ে প্রশ্ন তুললে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম রেজা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে সভায় জানান। সরেজমিন দেখা যায়, বালিয়াকান্দির সাতটি ইউনিয়নের বাজারগুলোতে বেশ কয়েকটি তরমুজের দোকান রয়েছে। সেখানে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। প্রতি কেজি তরমুজের দাম তারা নিচ্ছেন ৬০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত। যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা একটু সচ্ছল তারা কিনছে আর যারা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত তারা দাম শুনেই চলে যাচ্ছে।
বালিয়াকান্দি বাজারে তরমুজ কিনতে আসা ভ্যানচালক জামাল উদ্দিন জানান, যে তরমুজের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা সেই তরমুজের দাম চাচ্ছে ২৬০ টাকা। আমি আজ সারা দিন ধরে তো এতো টাকা আয়ই করতে পারিনি। তাহলে তরমুজ কিনব কীভাবে? এসময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও জানান, আমরা কোন যুগে বাস করছি। ব্যবসায়ীদের মাঝে সততা আর নীতি বলে কোন জিনিসই নেই। কীভাবে সাধারণ ক্রেতাদের ঠকানো যায় সারাক্ষণ তারা এই চিন্তায় থাকেন। এবারই প্রথম বালিয়াকান্দিতে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করার কথা স্বীকার করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরমুজ বিক্রেতা জানান, আমরা কী করব। যে একশ’ পিস তরমুজ গেল বছর আমরা ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় কিনে এনেছি সেই তরমুজ এবার আমাদের ৩০ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাহলে আমরা এখন কী করব? উপায় না পেয়ে তাই আমরা কেজি দরে বিক্রি করছি। রোজা শুরুর আগে পিস হিসাবে বিক্রি করলেন আর যখন রোজা শুরু হলো তখনই আপনারা কেজি দরে কেন বিক্রি শুরু করলেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি এর কোনো উত্তর না দিয়ে বেশ কিছু সময় চুপ করে থেকে বলেন সবাই বিক্রি করছে তাই আমিও করছি। বালিয়াকান্দিতে তরমুজের দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুম রেজা জানান, বিষয়টি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে উঠেছিল। এই উপজেলাতে তরমুজের দাম যাতে সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে সে বিষয়টি আমরা দেখব। কোনো সিন্ডিকেট করে লাভ হবে না। যারা বেশি মুনাফা লাভের আশায় সিন্ডিকেট করে তরমুজ কেজি দরে বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।