ইংল্যান্ডের মাটিতে অনন্য নজির গড়েও লজ্জার সাগরে ডুবতে হলো পাকিস্তানকে, রেকর্ডটি পাকিস্তানেরই হয়তো করা সম্ভব! এ কারণে বিশ্বক্রিকেটে তারা এখনও ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ দল হিসেবে কবে যে কী করবে, কেউ জানেন না! ইংল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ খেলছে পাকিস্তান। সিরিজে পাকিস্তানিরা নিজেদের শক্তির পরিচয় দিয়েছে, ডুবিয়েছেও। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ওয়ানডে ম্যাচে পাহাড় প্রমাণ রান করেও শেষমেশ হারতে হয়েছে! যেন আগের দুই ম্যাচের দেজা ভ্যু! পাকিস্তান প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে করবে বড় স্কোর, সেটা অনায়াসেই টপকে যাবে ইংল্যান্ড, সাউদাম্পটন ও ব্রিস্টলের মতোই ঘটল নটিংহামেও। চতুর্থ ওয়ানডেতে জেসন রয়ের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়ে ২ ম্যাচ হাতে রেখেই ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করেছে ইংলিশরা।
৬ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তান ইংল্যান্ডের বিশাল ৩৭৩ রান তাড়া করতে নেমে ৫০ ওভারে থামে ৩৬১ রানে, তৃতীয় ও চতুর্থ ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান তোলে ৩৫৮ ও ৩৪০ রান করে। ওয়ানডে ক্রিকেটে পাকিস্তান একমাত্র দল, যারা টানা ৩ ম্যাচে ৩৪০ বা এর বেশি রান করেছে। পাকিস্তানের ব্যাটিং শক্তি যে বেশ ধারালো, ইঙ্গিত দিচ্ছে স্কোরগুলো। কিন্তু এত রানের পুঁজি নিয়েও পাকিস্তানি বোলাররা ডুবিয়েছেন দলকে, ম্যাচ হারতে হয়েছে পাকিস্তানকে। বোলিং শক্তির রক্তাল্পতার ছবিটা প্রকট হয়ে যাচ্ছে প্রতি ম্যাচে। ব্যাটসম্যানরা ব্যাট হাতে দলকে পৌঁছে দিচ্ছেন ভালো জায়গায় বোলারদের ‘সৌজন্যে’ পাহাড় প্রমাণ রানও নিরাপদ দেখাচ্ছে না। বোলিংয়ে দাঁত ফোটাতে না পারার জন্যই আমেরকে ডাকা হচ্ছে বিশ্বকাপের দলে। পাকিস্তানের শুরুটাও হয়েছিল দুর্দান্ত। ৯ রানে ইমাম-উল হক চোটে মাঠ ছাড়লে ১০৭ রান তোলেন ফখর জামান (৫৭) ও বাবর আজম (১১২ বলে ১১৫)। শোয়েব মালিকের (২৬ বলে ৪১) ও সরফরাজের (১৪ বলে ২১) ছোট ঝড়ে ৩৪০ রানের স্কোর দাঁড় করায় পাকিস্তান। সেটাও শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হয়নি জয়ের জন্য।
লক্ষ্য ৩৪১, রান তাড়া করার শুরুও সেভাবেই করলেন রয় (১১৪) ও জেমস ভিন্স। জুনায়েদ-হাসানদের ওপর তা-বে ১৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে ওঠে ৯৩ রান। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নিতে পাকিস্তানের অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও ১৩ ওভার। এর মাঝে জো রুটকে সঙ্গে নিয়ে ১০৭ রানের জুটি গড়েন রয়, তার স্ট্রাইক রেট ইনিংসজুড়েই ছিল ১০০-এর ওপরে! ছয় মেরে ক্যারিয়ারে অষ্টম সেঞ্চুরি করার পর বেশিক্ষণ ক্রিজে ছিলেন না রয়। এরপর ১৫ রানের ব্যবধানে আরও ৩ উইকেট খুইয়ে চাপে পড়ে ইংলিশরা। জস বাটলার ও মঈন রানের খাতা খুলতে পারেননি। হাল ধরেন বেন স্টোকস (৬৪ বলে ৭১) দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেছে। সঙ্গ দিয়েছেন টম কারান (৩০ বলে ৩১)। ৩ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড।