উৎপাদনের চেয়ে খরচ বেশি
হওয়ায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া
ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হওয়ায় ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে বরিশালের কৃষকরা। উৎপাদনের চেয়ে বেশি খরচ হওয়ায় কৃষকদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বরিশাল অঞ্চলে যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়েছে এর মধ্যে ১৫ ভাগ ধান এখনও কাটা যায়নি। আর ফণি’র প্রভাবে ৪ লাখ ২৪ হাজার ৫৮৪ হেক্টর জমির ফসলের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ২৬ হাজার ২২৪ হেক্টর জমির ফসল। এক্ষেত্রে বরিশাল অঞ্চলে ক্ষতির পরিমাণ ১৩ কোটি টাকা। শনিবার ‘আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
কৃষি তথ্য সার্ভিস, আঞ্চলিক কার্যালয়ের আয়োজনে নগরীর বগুড়া রোডস্থ উপপরিচালকের প্রশিক্ষণ কক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় জানানো হয়, এ অঞ্চলে পানি আছে কিন্তু সেচ ব্যবস্থা নেই। বরিশালে মাত্র ২০ ভাগ ফসলি জমিতে সেচের ব্যবস্থা রয়েছে। কর্মশালায় বক্তারা বলেন, ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় এটি মূলত লোকসানের সেক্টরে পরিণত হচ্ছে। উৎপাদন খরচ ৮০০ টাকা হলে বিক্রি করতে হচ্ছে ৫০০ টাকায়। এরই মধ্যে বরিশাল অঞ্চলে ৮৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। বাকি ১৫ ভাগ ধান লোক না পাওয়ায় কাটা সম্ভব হচ্ছে না।
কর্মশালার প্রধান অতিথি মো. সাইনুর আজম খান বলেন, দেশে তিন কোটি ১১ লাখ টন ধান উৎপাদন হচ্ছে। সরকার চাচ্ছে এ উৎপাদন দ্বিগুণ অর্থাৎ সাত কোটি টনে উন্নীত করতে। সরকার এবারও কৃষকের কাছ থেকে বাড়তি দামে ধান কিনবে। তবে এজন্য লোকসান বলা যাবে না। এটি আমাদের মোট উৎপাদনে সহায়তা করছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ভারপ্রাপ্ত) উপপরিচালক আবদুল অদুদ খান বলেন, অধিকাংশ কৃষক জ্ঞানহীনভাবে ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার করে ফসল, শাকসবজি উৎপাদন করছেন। অন্যদিকে সেই ফসল খেয়ে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, এজন্য কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে কীটনাশক ব্যবহার করতে বলেন। তিনি কোনো ফলে ফরমালিন আছে বলে সন্দেহ হলে সেই ফল ১ লিটার পানির সঙ্গে ২ চামচ লবন দিয়ে তা ধুয়ে খাবার জন্য পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলমগীর হোসেন, বরিশাল কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ সামসুল আলম, বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. তৌফিকুল আলম, কৃষিবিদ শাহাদৎ হোসেন, কৃষিবিদ নাহিদ বিন রফিক প্রমুখ।