একাদশ জাতীয় সংসদ ও পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আহত ও নিহত ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ক্ষতিপূরণ বাবদ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এসময় নিহত চারজনের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা, গুরুতর আহত চারজনের প্রত্যেককে ১ লাখ ও আহত দুইজনকে ৩০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়। নিহতের পরিবারের যে কোনো সমস্যায় সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয়।
শনিবার দুপুরে ফতুল্লার চাঁদমারী এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা নির্বাচন অফিসের যৌথ উদ্যোগে ওই চেক নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং আহতদের হাতে তুলে দেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি-৬২) নারায়ণগঞ্জের অধিনায়ক লে. কর্নেল আল আমিন, র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী শমশের উদ্দিন প্রমুখ।
চেক বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, নির্বাচন একটি বহুমাত্রিক জটিল বিষয়। আর এ নির্বাচনকে ঘিরে
আমাদের অনেক প্রস্তুতি নেওয়া লাগে। সেই হিসেবে জাতীয় ও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন খুব ভালোভাবেই করা হয়েছে। সব ব্যবস্থা ভালো ছিল। তবে নারায়ণগঞ্জে যে ঘটনা ঘটেছে সেটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘূর্ণিঝড় হওয়ায় ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। আর ট্রলারে যেসব নির্বাচন কর্মকর্তারা ছিলেন তারাও সতর্ক ছিলেন না ঝড়ের বিষয়ে। তবে তাৎক্ষণিক তদন্ত প্রতিবেদনে আমরা পেয়েছি, এখানে জেলা নির্বাচন অফিসারের কিছুটা গাফিলতি ছিল। আর তাই তাৎক্ষণিকভাবে আমরা জেলা নির্বাচন অফিসারকে প্রত্যাহার করে নিয়েছি। আমরা আশা করেছিলাম যেহেতু এটি দুর্গম এলাকা সেহেতু সেখানে স্পিডবোট দেবে, আরও বেশি সতর্কতার বিষয়ে ব্যবস্থাপনা রাখবে। কিন্তু এটি না রাখার অপরাধে তাকে আমরা ক্লোজড করেছি। তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ক্লোজড করে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে রেখেছি। এটি আমাদের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। আর নারায়ণগঞ্জ ও বাঘাইছড়ি এলাকার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে জাতীয় নির্বাচন কিংবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমরা আরও ভালো ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচনগুলো করব।
সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিষয়ে তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশ আছে। স্থগিতাদেশ থাকায় নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
নারায়ণগঞ্জে নিহতরা হলেনÑ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে দায়িত্বরত বন্দর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পোলিং অফিসার আবদুর রব, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বরত ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের মেঘনা ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন, জেলা ট্রাফিকের টিএসআই এসএম সেলিম হোসেন ও উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসের আনসার রিতা আক্তার। গুরুতর আহতরা হলেন ৪৯নং বন্দর বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান, বন্দর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ রুহুল আমিন, বিশ্বনবী (সা.) ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক শামীম মিয়া, মো. মাহান্নাত হাসান, পুলিশ নায়েক নুরুল ইসলাম ও তালতলা বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কনস্টেবল আরিফুর রহমান।