ভারতের নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কাজ করছে বলে বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। রোববার লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফা ভোটগ্রহণ হয়। এর আগের দিন শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনিল অরোরাকে চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন, কেন্দ্রের শাসক দলের প্রভাবমুক্ত হয়ে শান্তিপূর্ণ এবং নিরপেক্ষ ভোটের ব্যবস্থা করুক কমিশন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ভোটের আগে এ চিঠি দিয়ে কমিশনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন মমতা।
চিঠিতে কড়া ভাষায় চারটি অভিযোগ জানিয়েছেন মমতা। তিনি অভিযোগ তোলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপির প্রভাবে ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যে কমিশন একাধিক অবৈধ, অসাংবিধানিক এবং একপেশে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে শুধু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রশাসন ও তার কর্মকর্তাদেরই নয়, সাধারণ মানুষও হেনস্তা হয়েছে। কমিশন নিযুক্ত কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার ১৪ মে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে শহরে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর রোডশোর অনুমতি দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ জানান মমতা। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে আঘাত করতে এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ও রাজ্যবাসীকে অপমান করতে ওই রোডশো থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গোলামাল বাধানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কমিশন বেআইনিভাবে দুই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে। তারা কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রের শাসক দলের কথা মেনে বারবার পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন। মমতা অভিযোগ করেন, এ বিষয়গুলো কমিশনের নজরে আনা সত্ত্বেও সুবিচার পাওয়া যায়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি শেষ দফায় নিরপেক্ষ এবং প্রভাবমুক্ত ভোটের দাবি করছেন বলে চিঠিতে জানিয়েছেন মমতা।
এদিকে রোববার লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফায় ভোট দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশনে ২০৯নং বুথে তিনি ভোট দেন। ভোটকেন্দ্র থেকে মমতার বাড়ি পায়েহাঁটা দূরত্ব। রোববার অন্য কোনো কর্মসূচি রাখেননি তৃণমূল নেত্রী। বিকালে মিত্র ইনস্টিটিউশনে আসেন ভোট দিতে। অন্যদিকে ইচ্ছা থাকলেও অসুস্থতার কারণে এদিন শেষ পর্যন্ত ভোট দিতে পারলেন না পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে ভোট দিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রী ও মেয়ে। আনন্দবাজার