১৯৮ শিক্ষকের
বিপরীতে কর্মরত
৯৬ জন
শিক্ষক সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। ৫০ বছরের প্রাচীন এ কলেজের পাঁচটি সেশনে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৬০০। কিন্তু ১৯৮ শিক্ষকের মঞ্জুরিকৃত পদে শিক্ষক আছেন মাত্র ৯৬ জন। ১০২ পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. সৈয়দ মাকসুমুল হক বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচির ধারাবাহিকতা রক্ষা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষাকার্যক্রম। এর কোন সমাধানও হচ্ছে না।
জানা গেছে, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষের পদটি ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস থেকে শূন্য রয়েছে। উপাধ্যক্ষ অধ্যক্ষের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। অধ্যাপকের ২৮ পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ৭ জন। সহযোগী অধ্যাপকের পদ ৪২টি। আছেন ১৮ জন। ২৪ পদ শূন্য। সহকারী অধ্যাপকের ৬৮টি পদের জায়গায় আছেন ২৫ জন। ৪৭ প্রভাষকের বিপরীতে আছেন ৩৭ জন। ছয় মেডিকেল অফিসারের পদের মধ্যে কর্মরত আছেন চারজন। বায়োকেমেস্ট্রির একমাত্র পদটিও শূন্য।
সুত্রমতে, মেডিসিন, শিশু ও গাইনি বিভাগের দুটি করে অধ্যাপকের পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া অধ্যাপক নেই কার্ডিওলজি, নিউরোমেডিসিন, চক্ষু, প্যাথলজি, কমিউনিটি মেডিসিন, ফারমাকোলজি, ফরেনসিক মেডিসিন, মাইক্রোবায়লজি, নাক-কান-গলা, রেডিও থেরাপি, শিশু সার্জারি, রক্তপরিসঞ্চালন, বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারী ও নিউনেটলজি বিভাগে। সহকারী অধ্যাপকের শূন্য থাকা উল্লেখযোগ্য বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে মেডিসিনের ৪টি, গাইনী, সার্জারী, শিশু ও এনাটমি বিভাগের ২টি করে এবং ফিজিওলজি বিভাগের একটি। কোন শিক্ষক নেই কমিউনিটি মেডিসিন ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে।
বরিশাল মেডিকেল কলেজে সর্বাধিক সংকটে আছেন দন্ত বিভাগের (বিডিএস) শিক্ষার্থীরা। প্রায় দেড়শ’ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক আছেন মাত্র পাঁচজন। এ বিভাগে অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকের কোনো পদ নেই। সহকারী অধ্যাপকের সাতটি পদ সম্প্রতি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওই সাত পদের বিপরীতে প্রেষণে দুজন সহকারী অধ্যাপক এ কলেজে পাঠদান করছেন। প্রভাষকের ১৫ পদের বিপরীতে আছেন তিনজন। তাও প্রেষণে নিয়োগপ্রাপ্ত।
এসব প্রসঙ্গে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. মাকসুমুল হক জানান, বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেন্টাল সার্জনদের অনুরোধ করে আনতে হয় ক্লাস নিতে। শিক্ষক সংকটের এ দৈন্যের চিত্র তুলে ধরে বহুবার দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোন সুফল মেলেনি বলে জানান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. সৈয়দ মাকসুমুল হক। তিনি বলেন, সম্প্রতি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর বরিশাল সফরেও শিক্ষক সংকটের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল।