বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে সোমবার গণভবনে আগত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - পিআইডি
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ দেশে বসবাসকারী সবাই সম্মানের সঙ্গে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে; এটাই তার সরকারের চাওয়া।
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে সোমবার গণভবনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি সব ধর্মের মানুষ যেন শান্তিপূর্ণভাবে, সম্মানের সাথে, স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও সফলতার কথা তুলে ধরেন। খবর বিডিনিউজের।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব ধর্মই শান্তির কথা বলে। এটাই বিশ্বাস করি যে, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার এবং এভাবেই বাংলাদেশে
উৎসবগুলো পালন করা হয়। যে ধর্মের উৎসবই হোক, সবাই মিলেই কিন্তু সেটা উদযাপন করে।’
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সহনশীলতা ও এই ভাতৃত্ববোধ সবার মাঝে থাকুক। যে কোনো সম্প্রদায় যেন নিজেদের অবহেলিত মনে না করে।’
সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকা-ের নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এগুলো এখন সারা বিশ্বে সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। আসলে জঙ্গি জঙ্গিই, তাদের কোনো ধর্ম নেই, দেশ নেই, সমাজ নেই। তারা জঙ্গিইÑ এটাই হলো বাস্তবতা। সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত রেখে আমরা অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে চাই।’
উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সব মানুষেরই জীবনমান উন্নত হোক সেটাই আমরা চাই।’ দেশকে পুরোপুরিভাবে দারিদ্র্যমুক্ত তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ : বাসসের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি বলেছেন, জাপান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার চলমান সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। জাপানের রাষ্ট্রদূত সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে একথা বলেন। সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, জাপানের দূত প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন জাপান সফরে দুই দেশের মধ্যে আড়াই বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের ৪০তম অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসটেন্স (ওডিএ) চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে, যা গেল বছরের চাইতে ৩৫ শতাংশ বেশি।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে জাপানে তার আসন্ন সফরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
বিগত নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়ে জাপানের দূত বলেন, আগামী ৫ বছর বাংলাদেশ ও দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূণ। কারণ এ সময়ে উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশের অর্থনীতি আরও এগিয়ে যাবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে জানান, জাপানের সহায়তার নির্মাণাধীন কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের আগ্রগতিতে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবেকে তার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, তিনিও জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপানের বিভিন্ন অবদনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের এক মহান বন্ধু। তিনি এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর শাসন আমলে দেশে রূপসা সেতু নির্মাণে জাপানের সহযোগিতার কথাও স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।