কমবেশি সব প্রবীণের পরিচর্যা প্রয়োজন হয়। প্রবীণ প্রথম দিকে অন্য কারও সহযোগিতা ছাড়াই নিজের যতœ নিতে পারেন। অসুস্থ প্রবীণের ক্ষেত্রে সবসময়ই অন্যের সেবাযতœ জরুরি হয়ে পড়ে। সমাজে যেসব প্রবীণ চলতে-ফিরতে অক্ষম, একাকী, অসুস্থ, তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন মানসম্মত রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হবে। মানসম্মত জীবনযাপন নিশ্চিত করতে ‘সেবা’ প্রবীণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এ সেবা সহজলভ্য হবে, যাতে প্রবীণ সহজেই সেবা গ্রহণের সুযোগ পান। একসময় যৌথ পরিবার ছিল এবং একই সঙ্গে প্রবীণের সংখ্যাও কম ছিল। ফলে পারিবারিক পর্যায়ে প্রবীণের মানসম্মত সেবা দেয়া সম্ভব ছিল। শিল্প বিপ্লব-পরবর্তী জ্ঞানবিজ্ঞানের প্রসার, তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তার, জীবনযাপনের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন পুরো সমাজের চেহারা পাল্টে দিয়েছে। কিছু মানুষ মানবকুলকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠছে। আবার একই সঙ্গে এই নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য প্রাণপণ লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এ সংগ্রাম চলাকালে মানুষের সঙ্গে মানুষের চিন্তা-চেতনায়, রুচিতে, সংস্কৃতিতে, জীবন সম্পর্ক ভাবনায় ভিন্নতা দেখা দিয়েছে। আমাদের দেশে প্রবীণদের সেবাযতেœর ক্ষেত্রেও মতভিন্নতা রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, প্রবীণ নিবাস-বৃদ্ধাশ্রম ইত্যাদির মাধ্যমে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সেবাযতœ করা দরকার। তারা মনে করেন, আবেগনির্ভর না হয়ে ব্যক্তিকে বাস্তবধর্মী হতে হবে। বার্ধক্য ব্যক্তির একান্ত নিজস্ব বিষয়, এর দায় সম্পূর্ণরূপে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের কাঁধে চাপিয়ে দেয়া উচিত হবে না। ব্যক্তিকে সমাজের পরিবর্তনগুলো বিবেচনায় নিয়ে নতুনভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে নিজকে খাপ খাওয়াতে হবে। প্রবীণ নিবাস বৃদ্ধাশ্রম এবং প্রবীণ সেবা কেন্দ্রে পেশাদার সেবাকর্মীর মানসম্মত সেবা প্রদানের মাধ্যমে কাক্সিক্ষত প্রবীণসেবা নিশ্চিত করতে হবে। প্রবীণরা প্রবীণদের মধ্যে থাকতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কারণ তাদের প্রত্যেকেরই শারীরিক এবং মানসিক চ্যালেঞ্জগুলো কাছাকাছি। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজনের ওপর নির্ভরশীল হলে ঝুঁকি বাড়বে। আবার অন্যরা মনে করেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে প্রবীণদের সেবাযতœ, দেখভাল করতে হবে। প্রবীণদের চেনাজানা পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন এবং পরিবার-পরিজনের সান্নিধ্যলাভ থেকে বঞ্চিত করে স্বস্তিদায়ক শান্তিপূর্ণ প্রবীণ জীবন হতে পারে না। তারা মনে করেন, প্রবীণ একদিন পরিবারেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং মৃত্যুও পরিবারের কাছে হবে। যে পরিবারের জন্য একদিন সব দুঃখ-কষ্টকে উপেক্ষা করে সবাইকে আঁকড়ে ধরে ছিলেন সেই পরিবারে জীবনের শেষ দিনগুলো থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক বিষয়। যৌথ পরিবার ভেঙে গেছে সেটা পুনঃস্থাপন করা খুবই কঠিন বিষয়। যৌথ পরিবারের উত্তাপ এবং সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে প্রবীণকে বৃদ্ধনিবাসে যেতে হবে না। প্রবীণ নিবাস থাকবে গুটিকয়েক, যেখানে নিরুপায় প্রবীণের আশ্রয় হবে। আমাদের সমাজ বৃদ্ধাশ্রমকে নেতিবাচকভাবে দেখে। পরিবারে থাকা প্রবীণদের সেবাযতœ পরিবারের সদস্যরা করবে, সম্ভব না হলে পেশাদার সেবাকর্মীর সাহায্য-সহযোগিতা নিতে হবে। প্রবীণসেবা নিয়ে যত রকম মতপার্থক্যই থাকুক না কেন, প্রবীণ সেবাকর্মীর প্রশ্নে সবাই একমত। ভবিষ্যতের বিপুলসংখ্যক প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মানসম্মত সেবার জন্য প্রশিক্ষিত প্রবীণ সেবাকর্মী প্রয়োজন হবে। যারা প্রবীণ সেবাযতেœর শিক্ষা প্রাতিষ্ঠানিক এবং মাঠপর্যায়ে গ্রহণ করবে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় দেড় কোটি প্রবীণ রয়েছেন, এদের মধ্যে অল্প কিছুসংখ্যক প্রবীণের জন্য স্বল্পকালীন কিংবা দীর্ঘকালীন সেবা প্রয়োজন হয়। এ মুহূর্তে আমাদের হাতে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রবীণ তথ্য নেই, যা থেকে আমরা বুঝতে পারি কতসংখ্যক প্রবীণের জন্য সেবা জরুরি। ঢাকা জেলার সাভারের কুল্লা ইউনিয়নে সাড়ে ১২শ’ প্রবীণের তথ্য সংগ্রহ করে দেখা যায় ৫০-৬০ জন প্রবীণ নারী-পুরুষের স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি সেবা প্রয়োজন। আমার ধারণা, দেশে ৫ থেকে ১০ লাখ প্রবীণের সেবা প্রয়োজন।
ভবিষ্যতে এ সংখ্যা বেড়ে যাবে। ২০৫০ সালে প্রায় ৫০ লাখ প্রবীণকে সেবার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এরা ক্রমেই অধিক নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন। এ নির্ভরশীল প্রবীণরা বৃদ্ধাশ্রম কিংবা পরিবারে যেখানেই থাকুক না কেন, তার মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষিত সেবাকর্মীর প্রয়োজন হবে। বিপুলসংখ্যক সেবাপ্রার্থী প্রবীণের জন্য আমাদের কী ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে, তা অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। সরকার নার্সিং পেশায় প্রবীণ সেবাযতœ বিষয়ে ১০০ নম্বরের একটি কোর্স যুক্ত করেছে। এখন প্রয়োজন পরিপূর্ণ জেরিয়েট্রিক নার্সিং কোর্স চালু করা। এটি হতে পারে ১ বছর কিংবা ২ বছরের একটি সার্টিফিকেট কোর্স। এখানে অর্ধেকটা সময় তত্ত্বগত জ্ঞান অর্জন করবে এবং বাকি অর্ধেক সময় হাতেকলমে জ্ঞান অর্জন করবে। এ প্রশিক্ষণ দেয়ার সময় আন্তর্জাতিক পাঠ্যসূচি অনুসরণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ সেবাকর্মীরা বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে জেরিয়েট্রিক নার্সিং ইনস্টিটিউট গড়ে উঠতে পারে। সরকার আইন প্রণয়ন করে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের মতো একটি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে, যেখান থেকে প্রবীণসেবার সনদ গ্রহণ করবে প্রশিক্ষিত জেরিয়েট্রিক নার্সরা। তাদের কার্যকলাপ আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। সেবাগ্রহীতা কিংবা সেবাকর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হলে আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাবে অথবা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিয়ে জেরিয়েট্রিক নার্সিংয়ের জন্য একটি পাঠ্যসূচি তৈরি করতে হবে। কত সময়ের মধ্যে পাঠ্যসূচি ক্লাসে পড়ানো শেষ হবে তার উল্লেখ থাকবে। মাঠপর্যায়ে দক্ষতা অর্জন করার পর সেবাকর্মী কোনো সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দেবে। প্রবীণ সেবাকর্মীদের একটি চাকরি বিধিমালা থাকবে। এ বিধিমালায় একজন প্রবীণ সেবাকর্মীর পারিশ্রমিক, মজুরি, বেতন, কর্মঘণ্টা, ছুটি, ভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি, বোনাস, কর্মচ্যুত ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ থাকবে। প্রবীণ সেবাকর্মী প্রবীণের বাসায় গিয়ে সেবা দেয়ার সময় কয়েক ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন। যেমনÑ পরিবারের সদস্যদের অসহযোগিতা, যৌন হয়রানি, অপমানসূচক কথাবার্তা, অমর্যাদাকর আচরণ, শারীরিক নির্যাতন, নির্দিষ্ট কাজের বাইরে অন্য কাজ করতে বলা, পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদে পক্ষ করা ইত্যাদি। একজন প্রবীণ সেবাকর্মী জানবেন যে, তিনি একটি চ্যালেঞ্জমূলক কাজে যোগ দিয়েছেন। এ কাজটি নিঃসন্দেহে জটিল এবং কষ্টকর। একই সঙ্গে আনন্দ এবং সম্মানের। কাজের ক্ষেত্রে অনেক নেতিবাচক দিক প্রবীণ সেবাকর্মীকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে। আবার অনেক ইতিবাচক দিক প্রবীণ সেবাকর্মীকে উজ্জীবিত করবে। যে কাজে যত বেশি চ্যালেঞ্জ, সেসব কাজে সাফল্য লাভও অনেক বেশি মর্যাদার। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এমনভাবে গড়ে উঠেছে যে, শুরুতে যে কোনো কাজেরই সাফল্য নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা স্বভাবগত ব্যাপার। ফলে একজন প্রবীণ সেবাকর্মীও সেবা দিতে গেলে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন। এমতাবস্থায় কঠিন মনোবল সেবাকর্মীকে কাক্সিক্ষত পর্যায়ে উন্নীত করতে সহায়তা করবে। সেবাকর্মী কোনো বাসায় গিয়ে প্রবীণের সেবা করার আগে সেই বাসার পরিবেশ এবং ঝুঁকিগুলো নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই করে দেখবে। সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সেবাকর্মীকে সতর্ক হতে পরামর্শ দেবে। যেসব সেবা দেয়ার কথা হয়েছে, যেসব সেবা দক্ষতা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে। মানসম্পন্ন সেবা প্রদানের মাধ্যমেই সেবাকর্মীর প্রয়োজনীয়তা সবাই উপলব্ধি করতে পারবে। প্রবীণ সেবাকর্মীকে মনে রাখতে হবে, একজন প্রবীণ জীবনের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে এই অবস্থায় উপনীত হয়েছেন। তার অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা দিয়েই তিনি প্রবীণ জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবেলা করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
তিনিই সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি করেন একজন প্রবীণ সেবাকর্মীর প্রয়োজনীয়তা। কারণ বার্ধক্য তার শরীরে বাসা বেঁধেছে। দৈনন্দিন চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়ায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, গোসল করা, বিছানার চাদর পাল্টানো, নখ কাটা, শেভ করা, ওষুধ খাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে দিন দিন নির্ভরশীলতা বাড়তে থাকে। একাকি প্রবীণের ক্ষেত্রে এ চ্যালেঞ্জটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এসব প্রবীণ সেবাকর্মী আসার অপেক্ষায় থাকেন। একটু দেরিতেই অধৈর্য হয়ে পড়েন। আমাদের দেশে চলাচল এবং যানবাহনের গতি সামাজিক কিছু বিষয় দ্বারা অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। ফলে কোথায়ও নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছানো কিছুটা কঠিন বটে। সেবাকর্মীকে কাজের ক্ষেত্রে পেশাদারি মনোভাব প্রদর্শন করতে হবে। অনেক বাসাবাড়িতে সেবাকর্মীকে আপ্যায়ন করতে চায়। আবার কেউ কেউ ঈদের সময় উপহার কিংবা আর্থিক সহায়তা দিতে চায়। এসব ব্যাপারে সেবাকর্মীকে সতর্ক হতে হবে। তাকে মনে করতে হবে, তিনি চাকরি করছেন। নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান তার বেতন-ভাতা-বোনাস দিচ্ছে। ফলে সেবা গ্রহণকারী প্রবীণের পরিবার থেকে উপহার, আর্থিক সুবিধা গ্রহণ অনৈতিক। এসব সুবিধা গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে কর্মীর পেশাদারিত্ব ক্ষুণœ হয়। পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠান যেমন বিয়ে, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, কুলখানি, মিলাদ এসব অনুষ্ঠানে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নিয়ে অংশগ্রহণ করতে হবে। প্রবীণ সেবাকর্মী একনাগাড়ে কাজ করতে গেলে সেবার মান বৃদ্ধিতে অসুবিধা হবে। তাকে মাঝেমধ্যেই বিশ্রামে যেতে হবে অথবা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো কাজ করতে হবে। দীর্ঘদিন একই ধরনের কাজ প্রবীণ সেবাকর্মীর শারীরিক এবং মানসিকভাবে ক্ষতি করতে পারে। প্রতি ৬ মাস অন্তর একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কিংবা সাইকোথেরাপিস্টের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে সুষম খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ না থাকলে একজন সেবাকর্মীর পক্ষে প্রবীণের সেবাযতœ চালিয়ে নেয়া খুবই কষ্টকর। সেবাকর্মী শুধু টাকাই রোজগার করবেন না, একই সঙ্গে প্রবীণসেবার যাতনাও অর্জন করবেন। এই যাতনা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় মানসম্পন্ন সেবাকর্মীর অভাব দেখা দেবে। ফলে প্রবীণের স্বস্তিদায়ক শান্তিপূর্ণ জীবন অতিবাহিত করা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। আমদের মনে রাখতে হবে, একজন দক্ষ-যোগ্য পরিশ্রমী মানবিক প্রবীণ সেবাকর্মী অনেক বড় সম্পদ। কত বড় সম্পদ তা বোঝা যায় যখন আমরা প্রবীণসেবা নিয়ে কোনো ধরনের জটিলতায় পড়ি। আগামী দিনের বার্ধক্যকে অর্থবহ এবং আনন্দদায়ক করার জন্য প্রবীণ সেবাকর্মী একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
লেখক : সভাপতি, এজিং সাপোর্ট ফোরাম
ট্রেজারার, বাংলাদেশ জেরোন্টলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএ)