আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৪-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

চামড়া শিল্পনগরী ব্যবস্থাপনায় আসছে কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক
| অর্থ-বাণিজ্য

সাভারে চামড়া শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) ব্যবস্থাপনায় ‘ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড’ নামে নতুন প্রতিষ্ঠান গঠন করা হচ্ছে। জয়েন্ট স্টকে রেজিস্ট্রেশন হবে আগামী সপ্তাহেই। এটি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে ২৬ মে’র মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে সরকারের পাঁচ ও ব্যবসায়ীদের সাতজন সদস্য থাকবেন। বৃহস্পতিবার শিল্প মন্ত্রণালয়ে সাভার চামড়া শিল্পনগরীর সার্বিক বিষয়ে চামড়া শিল্পসংশ্লিষ্ট সংগঠন ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
সভায় ২০১৯ সালের জুলাইয়ের মধ্যে প্রত্যেক ট্যানারি মালিককে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের মানদ- অনুযায়ী প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে যন্ত্রপাতি স্থাপনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ট্যানারির উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকে প্লটের মূল্য কমানোর দাবি, সলিড বর্জ্য ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থাকরণ, ট্যানারি মালিকদের ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ এবং লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের কমপ্লায়েন্স অনুসরণের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চামড়া শিল্পনগরীর প্রতি বর্গফুট জায়গা উন্নয়নের জন্য সরকারের ১ হাজার ৭০০ টাকা খরচ হলেও উদ্যোক্তাদের স্বার্থ বিবেচনা করে তা প্রতি বর্গফুট ৪৭১ টাকা নির্ধারণ করেছে। সার্বিক বিবেচনায় প্লটের মূল্য কমানোর আর কোনো সুযোগ নেই। যেসব ট্যানারি মালিক স্থানান্তরের শর্ত পূরণ করেছেন, তাদের অনুকূলে শিল্প মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ করেছে।
সভায় জানানো হয়, সাভার চামড়া শিল্পনগরীর সিইটিপির অবশিষ্ট যন্ত্রপাতি সিডিউল অনুযায়ী প্রিশিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই) শেষে স্থাপন করা হবে। চীনা ঠিকাদার কোম্পানি আগামী চার মাসের মধ্যে সিইটিপি পুরোপুরি চালু এবং দেশীয় জনবলকে প্রশিক্ষিত করে কোম্পানির কাছে পরিচালনার দায়িত্বভার হস্তান্তর করবে। এছাড়া, চামড়া শিল্পনগরীর সলিড বর্জ্য ডাম্পিংয়ের জন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজে বের করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় ট্যানারি মালিকরা লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের কমপ্লায়েন্স সনদ অর্জনের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারা বলেন, এটি না করা হলে ২০২১ সাল নাগাদ চামড়া শিল্প খাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হবে। সভায় সালমান এফ রহমান বলেন, যেসব ট্যানারি মালিক জমির নির্ধারিত মূল্য পরিশোধে আগ্রহী নন, তাদের প্লট বাতিল করা হবে। 
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ী ও জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে সরকার ট্যানারি মালিকদের অনেক সুবিধা দিয়েছে। এ শিল্পের স্বার্থে আইনের আওতায় ভবিষ্যতেও যতটুকু সুবিধা দেওয়া সম্ভব, তা দেওয়া হবে। তবে জমির মূল্য কোনোভাবেই কমানো হবে না।
সভায় শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম, অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ, বিসিক চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান, এলএফএমইএবির চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম, বিএফএলএলএফইএ’র চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিনসহ বুয়েট, বিসিক এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।